রোহিঙ্গা ভোটার: ইসি কর্মী-জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত, বলছে দুদক

নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কর্মী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জাতীয় পারিচয়পত্র পাচ্ছে বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2019, 10:33 AM
Updated : 15 Sept 2019, 10:42 AM

রোববার নগরীর লাভলেইনে জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা কথা বলার পর দুদকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরিফ উদ্দিন এ কথা জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ভোটার তালিকার কাজে ব্যবহৃত ‘বেশ কয়েকটি’ ল্যাপটপের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ২০১৫ সালের পর থেকে।

“এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এসব ল্যাপটপের তথ্য নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানেন না। রোহিঙ্গারা ভোটার হয়ে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে পাসপোর্ট করতে যাচ্ছে। এমন ৫৪ জনের তথ্য চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিস থেকে দুদককে দেওয়া হয়েছে।”

গত বুধবার জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে প্রথম দফা তথ্য সংগ্রহ করেন দুদক কর্মকর্তারা ।

শরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে দুদকের একটি দল রোববার আবারও জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যায় এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে।

পরে শরিফ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোহিঙ্গারা কাদের সহায়তায় এনআইডি বা স্মার্ট কার্ড পাচ্ছে তাদের ধরতে চায় দুদক। নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কেউ জড়িত কি না- তা তারা খতিয়ে দেখছেন।

“নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কর্মচারী, সিটি করপোরেশন এবং জেলা পর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশ থাকার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে এসেছে।”

তিনি বলেন, শুধু চট্টগ্রাম নয়, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার ঘটনাগুলোও দুদক খতিয়ে দেখছে।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসেন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোটার হওয়ার নিয়ম এবং বিস্তারিত প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন দুদক কর্মকর্তার। এ বিষয়ে তারা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার ঘটনায় জেলা নিবার্চন কমিশন কার্যালয় যে তদন্ত কমিটি করেছে, তার প্রতিবেদন দেখতে চেয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। ওই তদন্তের পর ইসি কী ব্যবস্থা নিয়েছে- তাও জানতে চেয়েছেন তারা।

এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলে রোহিঙ্গা সন্দেহে ৫৪টি ফরম আলদা করা হয়েছে জানিয়ে মুনীর হোসেন খান বলেন, “তাদের বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।”

রোহিঙ্গা ভোটার ঠেকাতে চট্টগ্রামের নয়টি উপজেলায় সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বসবাসকারীর জমির দলিল, নিকট আত্মীয়ের এনআইডির কপি, জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যয়ন- সব ঠিক থাকলে তাদের উপস্থিতিতেই ছবি তোলার কাজ হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে এসব মনিটরিং চলছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, “নিয়মমত কাগজপত্র দিলে আমরা ভোটার করে নিই। এ ক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব অনেক বেশি।”