চিকিৎসক আকাশের আত্মহত্যা: অভিযোগপত্রে স্ত্রীসহ আসামি ৫

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় তার স্ত্রীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2019, 01:19 PM
Updated : 11 Sept 2019, 01:26 PM

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার এসআই আবদুল কাদের সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্রটি জমা দিলেও বুধবার বিষয়টি জানা যায়।

অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন- চিকিৎসক আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার মা শামীমা শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, ছোট বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা এবং মিতুর কথিত বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলম।

মামলার ছয় আসামির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভারতীয় নাগরিক উত্তম প্যাটেল নামের একজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মিতু, তার বাবা-মা ও বোন এবং ডা. মাহবুবুল আলমসহ মোট পাঁচজনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে।

“সোমবার এটি প্রসিকিউশন শাখায় জমা পড়ে। আজ অভিযোগপত্রটি সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হয়েছে।”

চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রহিমও অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।

গত ১ ফেব্রুয়ারি ডা. আকাশের মা জোবেদা খানম বাদি হয়ে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে ছয়জনকে আসামি করে মামলাটি করেছিলেন।

৩২ বছর বয়সী আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ‘থ্রি ডক্টরস’ নামে মেডিকেল ভর্তির একটি কোচিং সেন্টার চালাতেন তিনি।

তার স্ত্রী মিতু কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস শেষ করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ইন্টার্ন করেন। সেখানেই আকাশের সঙ্গে তার পরিচয়, ২০১৬ সালে বিয়ে।

বিয়ের পরপরই উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান মিতু। সেখান থেকে ১৩ জানুয়ারি দেশে ফেরেন তিনি। এরপর ৩১ জানুয়ারি ভোরে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন আকাশ।

আত্মহত্যার আগে ফেইসবুক স্ট্যাটাসে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ করে যান। এর ‘প্রমাণ’ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার ‘বন্ধুদের’ বেশ কিছু ছবিও তিনি ফেইসবুকে তুলে দিয়ে যান।

এরপর ৩১ জানুয়ারি রাতে নন্দনকানন এলাকায় এক আত্মীয়র বাসা থেকে মিতুকে আটক করে পুলিশ।

আকাশের মায়ের করা মামলায় মাহবুবুল আলম নামে যে চিকিৎসককে আসামি করা হয়, তিনি কুমিল্লা মেডিকেলে মিতুর ব্যাচমেট ছিলেন বলে তখন জানিয়েছিল পুলিশ।

অগাস্টের শেষ সপ্তাহে উচ্চ আদালত থেকে এ মামলায় জামিন নেন মিতু। অন্য আসামিরা সবাই পলাতক।