রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নেওয়া ঠেকাতে ১৮ নির্দেশনা চট্টগ্রাম পুলিশের

রোহিঙ্গা ও ভুয়া তথ্য ব্যবহারকারীদের পাসপোর্ট নেওয়া ঠেকাতে তথ্য যাচাইয়ের নথিতে আবেদনকারীর ছবি যুক্ত করে জেলা পুলিশেরে কাছে পাঠাচ্ছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিশেষ শাখা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2019, 03:29 PM
Updated : 6 Sept 2019, 03:29 PM

পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে ১৮টি নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে তথ্য যাচাইকারী কর্মকর্তাদের জন্য।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, এসব নির্দেশনা সঠিকভাবে অনুসরণ করা হলে ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা কঠিন হবে রোহিঙ্গাদের জন্য।

নতুন পাসপোর্ট আবেদনকারীর জমা দেওয়া দুটি ফরমের একটি সংরক্ষিত থাকে পাসাপোর্ট কার্যালয়ে। অন্য ফরমটি পাঠানো হয় পুলিশের বিশেষ শাখায়।

বিশেষ শাখা থেকে আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা এবং জেলা পুলিশ তার স্থায়ী ঠিকানা যাচাই করে। আর শহরের বাইরের ঠিকানা দিয়ে কেউ পাসপোর্টের আবেদন করলে একটি ফরম পাঠানো হয় ওই জেলার বিশেষ শাখায়।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মনজুর মোরশেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতি মাসে অন্তত দুই হাজার পাসপোর্ট আবেদনের তথ্য যাচাই ফরম আসে তাদের কাছে।

“আবেদনকারীরা যাতে কোন ধরনের তথ্য গোপন করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে না পারে সে বিষয়ে ১৮টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবেদনে কোনো তথ্যে গড়মিল থাকলে পাসপোর্টের ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হবে না।”

আগে আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকানার তথ্য যাচাইয়ের জন্য নগর পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানো নথিতে ছবি থাকত না। স্থায়ী ঠিকানায় ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করতে আবেদনকারীর নামই ছিল সম্বল।

নগর বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এখন জেলার বিশেষ শাখায় নথি পাঠানোর সময়ও আবেদনকারীর ছবি যুক্ত করে দিচ্ছি। যাতে ছবি দেখে আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকানাসহ বিভিন্ন ধরনের তথ্য সহজে নিশ্চিত করা সহজ হয়।”

চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসাপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের বিদেশ যাত্রার বেশ কয়েকটি ঘটনা সম্প্রতি ধরা পড়েছে।

এসব ঘটনায় দেখা যায়, ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য দিয়ে রোহিঙ্গারা জাতীয় পরিচয়পত্র, জাতীয়তা ও জন্ম নিবন্ধন সনদ নিচ্ছে। সেসব নথি দিয়ে তারা পাসপোর্টের আবেদন করছে।

 

পাসপোর্ট কর্মকর্তারা সন্দেহের বশে কয়েকজন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করে আটক করতে পারলেও সবক্ষেত্রে তা করা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা।   

আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, “আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের যে ১৮টি নির্দেশনা দিয়েছি, সেগুলো অনুসরণ করলে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে কেউ পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবে না।”

এসব নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০০০ সালের আগে যাদের জন্ম তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে। তা অনলাইনে যাচাই করে যাচাইকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর নিতে হবে।

অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং যাদের এনআইডি নেই, তাদের মা-বাবার এনআইডি যাচাই করতে হবে। আবেদনকারীর ছবি যাচাইয়ের পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সনদ, সত্যায়নকারীর পরিচয় এবং সত্যায়ন করেছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।

নির্দিষ্ট ঠিকানায় তথ্য পাওয়া না গেলে আবেদনকারীর ভূমিহীন সনদ, তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কিনা, সেসব তথ্যও যাচাই করতে হবে।

এছাড়া আবেদনকারীকে চেনেন এমন স্থানীয় দুই ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বরও নিতে বলা হয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের।