পাসপোর্ট করতে গিয়ে আঙুলের ছাপে রোহিঙ্গা যুবক ধরা

বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পর সরকারি ডেটাবেজে সংরক্ষিত রোহিঙ্গাদের আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় ধরা পড়েছেন এক যুবক।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2019, 02:21 PM
Updated : 28 August 2019, 02:21 PM

বুধবার নগরীর মনসুরাবাদে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে এ ঘটনা ঘটে।

আটক মো. ফয়সাল (১৯) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল লতিফপুরের ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক আবু সাইদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাসপোর্টের আবেদনে এখন নতুন করে আঙুলের ছাপ নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া যুক্ত হয়েছে। সে প্রক্রিয়ায় ফয়সাল আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার পর সেটি তথ্য ভাণ্ডারে সংরক্ষিত রোহিঙ্গাদের সাথে মিলে যায়।”

পরে জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল নিজেকে রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকার করেন। তার কাছ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকত্বের নিবন্ধন কার্ডও পাওয়া যায় বলে জানান আবু সাইদ।

মিয়ানমারের নিবন্ধন কার্ড অনুযায়ী ফয়সালের বাবার নাম সোনা মিয়া এবং মায়ের নাম আনোয়ারা বেগম। কিন্তু তিনি পাসপোর্ট আবেদনে বাবা-মার নাম লিখেছিলেন মোহাম্মদ নাসিম ও শমজিদা বেগম।

জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল পুলিশকে বলেন,  চার বছর বয়সে বাবা-মার সাথে বাংলাদেশে এসে উখিয়ার বালুখালী শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নিলেও থাকতেন বান্দরবানের সীমান্তবর্তী উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়িতে।  

আটক ফয়সালকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান পরিচালক আবু সাইদ।

২০১৭ সালে ২৪ অগাস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সেনা অভিযান শুরু হলে বাংলাদেশ সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল নামে।

এরপর কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেওয়া লাখো রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয় সরকার।

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতেও তাদের ‘বায়োমেট্রিক’ কাজে লাগানোর পরামর্শ ছিল নির্বাচন কমিশনের।

এএফআইএস  (অটোমেটিক ফিঙ্গার আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম) সাপোর্ট সার্ভিসের মাধ্যমে দ্বৈত ভোটার শনাক্ত করা যায় । রোহিঙ্গাদের আঙ্গুলের ছাপও এই পদ্ধতিতে তথ্যভাণ্ডারে ম্যাচিং করে দেখলে জালিয়াতি ধরা সম্ভব।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এ বছর অগাস্টে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তৈরি পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে।

বায়োমেট্রিক তথ্য সম্বলিত এ পরিচয়পত্রটি নকল বা জাল করা সম্ভব নয় এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানকারী ১২ বছরে অধিক বয়সী তথ্য যাচাই করা সকল মিয়ানমার নাগরিককে এ পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে।

ইউএনএইচসিআর বলছে, এটিই কোনো কোনো রোহিঙ্গার ক্ষেত্রে জীবনের প্রথম পরিচয়পত্র প্রাপ্তি। পরিচয়পত্রটি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহায়তার পাশাপাশি আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হবে।