২৩ জুলাই মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ঘোষণার দাবি

মনোসামাজিক স্বাস্থ্য বিষয়ে অজ্ঞতা ও অসচেতনতা দূর করতে ২৩ জুলাইকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ঘোষণার দাবি উঠেছে চট্টগ্রামের এক মতবিনিময় সভায়।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2019, 03:06 PM
Updated : 22 August 2019, 03:06 PM

মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় অধিপরামর্শমূলক সংস্থা মেন্টাল হেলথ এডভোকেমি এসোসিয়েশন (মা) বৃহস্পতিবার ওই মতবিনিময় সভা আয়োজন করে।

সভায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উৎস’র নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কামাল যাত্রা বলেন, “জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৪০০ বেসরকারি সংগঠন ২৩ জুলাইকে বেসরকারিভাবে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালন করে।

“সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বারবার আমরা দাবি জানিয়েছি। তারা বলে, ঘোষণা দেব। কিন্তু এখনও তা হয়নি।”

সভায় জানানো হয়, ১৯৭৪ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ‘জাতীয় পাগল সম্মেলন’ আয়োজন শুরু করেন মনোসামাজিক প্রতিবন্ধী মহসিন সিদ্দিক লুলু। পরে ২০০৬ সালে ‘জাতীয় মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সম্মেলন’ আয়োজন করেন তিনি।

২০০৭ সালের ২৩ জুলাই মহসিন সিদ্দিক মারা যান। তার মৃত্যুর ওই দিনটিতে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে সংগঠনগুলো।

মোস্তফা কামাল বলেন, “দেশে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে শত বছরের পুরনো পাঠ্যসূচি পড়ানো হয়। ফলে তারাও পড়া শেষে মানসিক চিকিৎসা সেবা দিতে পারছেন না।”

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট পরিচালিত পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২৩ শতাংশ মানুষ মানসিক সমস্যাগ্রস্ত।

“বাংলাদেশে ১৬ দশমিক এক শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ মানসিক রোগে ভুগছে। তার মধ্যে ৮ দশমিক চার শতাংশ উদ্বেগজনিত অসুস্থতায়, ৪ দশমিক ছয় শতাংশ বিষন্নতায়, ১ দশমিক এক শতাংশ গুরুতর মানসিক রোগে এবং দশমিক ছয় শতাংশ মানুষ মাদকাসক্তজনিত রোগে আক্রান্ত।”

বেসরকারি সংস্থা ইলমা’র নির্বাহী পরিচালক জেসমিন সুলতানা পারু বলেন, কিশোরী ও নারীরা মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।

বেসরকারি সংস্থা মমতা’র নির্বাহী পরিচালক রফিক আহমদ বলেন, বয়:সন্ধিতে কিশোর-কিশোরীরা মানসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এ খাতে চিকিৎসক সংকট প্রকট। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ঘোষণা এখন সময়ের দাবি।

সভার সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও রাজনীতি নানা ক্ষেত্র থেকেই সাধারণের মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হয়। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি নাগরিক অধিকার। এটা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উৎস’র কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম খান। আলোচনায় অংশ নেন ড. মোহাম্মদ মোজাহেরুল ইসলাম, সমাজকর্মী সিদ্দিকুর রহমান, মমতা’র নির্বাহী পরিচালক রফিক আহমেদ প্রমুখ।