পেয়ারা বিক্রেতাকে এএসআইর ‘মারধরের’ পর অবরোধ-ভাংচুর

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার মইজ্জ্যারটেক এলাকায় পেয়ারা বিক্রেতাকে এক গোয়েন্দা পুলিশ সদস্য 'মারধর' করার পর সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2019, 06:30 PM
Updated : 19 August 2019, 06:30 PM

ওই পেয়ারা বিক্রেতা অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকায় তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করে। 

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ওই ঘটনার সূত্রপাত। রাত ১০টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ পাড়ে এই সড়ক অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। 

আহত পেয়ারা বিক্রেতা মোহাম্মদ আলীকে (২৮) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী) জাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মইজ্জ্যারটেক এলাকায় একটি অভিযান শেষে ফেরার পথে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দলের সদস্য এএসআই জাহিদুল কবীর মইজ্জ্যারটেক মোড়ে পেয়ারা কিনতে যান। 

“এসময় পেয়ারা বিক্রেতা মোহাম্মদ আলীর মাথে তার কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে ওই পেয়ারা বিক্রেতা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন।"

ঘটনার পর স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে আহত পেয়ারা বিক্রেতা আলীকে মইজ্জ্যারটেক পুলিশ বক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। 

তখন ওই এলাকায় জড়ো হওয়া লোকজনের মধ্যে পেয়ারা বিক্রেতা আলী 'মারা গেছে' বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, গোয়েন্দা পুলিশের ওই সদস্য পেয়ারা বিক্রেতা আলীর জননাঙ্গে লাথি মারেন। এতে আলী অজ্ঞান হয়ে যান। 

পুলিশ সদস্যের শাস্তি দাবিতে স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের উভয় পাশে কয়েকশ গাড়ি আটকা পড়ে। তখন পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।

খবর পেয়ে সেখানে যান  উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম, সংলগ্ন চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আলী ও শিকলবাহা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শফিউল করিম।

টেলিফোনে আহত পেয়ারা বিক্রেতা আলীর সঙ্গে স্থানীয়দের কথা বলিয়ে দিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্যরা। 

কিন্তু এরপরও অবরোধ চলতে থাকে। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করে অবরোধকারীরা। এক পর্যায়ে তারা চার-পাঁচটি গাড়ির কাচও ভাংচুর করে। তখন পুলিশও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।

রাত ৯টার দিকে চিকিৎসা শেষে আলীকে ঘটনাস্থলে আনার পর তাকে দেখে অবরোধকারীরা শান্ত হয়। এরপর রাত ১০টায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

পুলিশের সহকারী কমিশনার জাহিদুল ইসলাম বলেন, “হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে পেয়ারা বিক্রেতা আলী ফিরলে সবার উপস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় তাকে দেয়া হয়।

“এর আগে উত্তেজিত লোকজন পাথর ছুড়ে ও কয়েকটি গাড়ির কাঁচ ভাঙলে তাদের লাঠিচার্জ করা হয়। পরিস্থিতি রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্বাভাবিক হয়।" 

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা, বন্দর) এস এম মোস্তাইন হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই ঘটনায় জড়িত এএসআইর বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।