কিন্তু সৈকতে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে থাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বলছে, পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তবেই স্থায়ী আলোকায়নের ব্যবস্থা করবে তারা।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আলোর স্বল্পতার বিষয়টি জানিয়ে সোমবার সিডিএকে একটি চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ।
সেখানে বলা হয়, সৈকতের মূল পয়েন্টে এক সারি সৌরবিদ্যুৎ চালিত বাতির মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
“কেননা পানি থেকে স্থলভাগের দিকে সৈকত এলাকা অনেকখানি প্রশস্ত। ফলে একসারি সৌরবিদ্যুৎ চালিত বাতি দিয়ে সৈকত আলোকিত হয় না।”
পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সৈকতের ধারে ‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। ওই প্রকল্পের আওতায় সৈকতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে।
কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পের উদ্বোধন জন্য প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে গেলে পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
এরপর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এ সংযোগের আওতায় সৈকতে থাকা প্রায় ৫০টি বিদ্যুতের খুঁটিতে কোনো বাতি আর জ্বলছে না। সৈকতের মূল পয়েন্টে থাকা সৌরবিদ্যুৎ চালিত বাতিগুলোই সামান্য আলো দিচ্ছে।
পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সৈকত এলাকার ওয়াকওয়ে নতুনভাবে সাজানোর পর পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাত ১২-১টা পর্যন্ত পর্যটকরা থাকেন।
“কিন্তু আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না হওয়ায় সৈকত এলাকা রাতে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বলে আমরা সৈকতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করেছি। কিন্তু নিরাপত্তায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।”
ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, পুলিশের নানা রুটিন কাজের মধ্যে অতিরিক্ত ফোর্স দিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা সব সময় সম্ভব নাও হতে পারে। পুলিশের সংখ্যা কম হলে নানা সমস্যা হতে পারে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার সিডিএকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়- রাতের বেলা সৈকতে আসা দর্শনার্থীরা আলোর স্বল্পতার কারণে নানা সমস্যায় পড়েন।
“এরই মধ্যে সৈকতে আসা বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হয়েছেন। অন্ধকারে অসুবিধা, পরিবেশ নষ্ট হওয়া এবং বিভিন্ন অপরাধের শিকার হওয়ায় দর্শনার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।”
“বিল বাকি পরার বিষয়ে চিঠি দেওয়া হলে সিডিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়- তারা এখন বিল দিতে পারবেন না। ওই প্রকল্পে এর জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। তারাই বলেছেন আপাতত ওই পোলগুলোতে সরবরাহ বন্ধ রাখতে।”
গিয়াস উদ্দিন বলেন, দুটোই সরকারি প্রতিষ্ঠান। পর্যটকদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সিডিএ আলোচনা করলে হয়ত কোনো সমাধান করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিডিএর চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী রাজীব দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিল বকেয়া থাকায় পিডিবি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
“সৈকতের পুরো বিউটিফিকেশনের কাজ যখন শেষ হবে তখন স্থায়ী আলোকায়নের ব্যবস্থাও করা হবে। আলো কম থাকায় দর্শনার্থীদের কিছুটা দুর্ভোগ হচ্ছে। তবে মূল সৈকতে সোলার লাইট আছে।”
২০২০ সালের জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। সে সময় সৈকত ঘিরে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।