পশুর হাটে ‘গুজব তুলে ছিনতাই’ নিয়ে সতর্ক করল চট্টগ্রামের পুলিশ

কোরবানির পশুর হাটে ‘ছেলে ধরা গুজব’ তুলে প্রতারকরা যাতে টাকা ছিনিয়ে নিতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2019, 12:57 PM
Updated : 5 August 2019, 12:57 PM

সোমবার চট্টগ্রামের একটি কনভেনশন সেন্টারে ঈদুল আযহার নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা এ পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “বাঁশখালীতে ছেলেধরা গুজব তুলে ছাগল কিনতে যাওয়া তিন ব্যক্তিকে মারধর করে টাকা পয়সা নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছি।”

গুজব তুলে কেউ যেন ছিনতাই করতে না পারে- সে বিষয়ে পুলিশ সজাগ রয়েছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, “যদি টাকা বহনের ক্ষেত্রে কেউ পুলিশের সহায়তা চায় তাহলে সহায়তা করা হবে।”

গত ২২ জুলাই বাঁশখালীর ইলশা গ্রামে ছাগল কিনতে যাওয়া তিন যুবককে ‘ছেলেধরা’ গুজব তুলে মরাধর করা হয়।

সেসময় তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সাও ছিনিয়ে নেওয়া হয় অভিযোগ করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে, অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেন হামলার শিকার একজন।

পুলিশ সুপার মিনা বলেন, “ছেলেধরা গুজবটি এখন সারা দেশে বন্ধ হয়েছে। যেহেতু বাঁশখালীতে এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য আমরা সজাগ আছি, যাতে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে।”

ঈদের মৌসুমে ব্যবসায়ীদের টাকা বহনের সময় তাদের নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা মোটর সাইকেল নিয়ে টাহলে থাকবে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রধান।

তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি অবৈধ মোটর সাইকেল ব্যবহার করে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে। তা রোধ করতে এবার পুলিশ সদস্যরা মোটর সাইকেল নিয়ে টহলে থাকবে।”

এছাড়া চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই রোধে টহল বাড়ানো, অতিরিক্ত হাসিল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি গরুর বাজারে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন বসানোর কথাও জানান তিনি।   

বাইরের জেলা থেকে চট্টগ্রামে আসা কোরবানির পশুবাহী ট্রাকগুলো যদি জোর করে কোনো হাটে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন পুলিশ সুপার।

সভায় বলা হয়, মহাসড়কে কোনো ধরনের পশুর হাট বসতে দেওয়া হবে না। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার তিন হাজার ৮৮টি ঈদ জামাত, ১৪টি পর্যটন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মার্কেটের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

মতবিনিময় সভায় পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করার আশ্বাস দেন।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যদার নিচে কেউ সুর্নিষ্ট অভিযোগ ছাড়া গাড়ি তল্রাশি করবে না বলে সভায় জানানো হয়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার হোসেন বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার সড়কের অবস্থা ভালো। তারপরও ভারী বৃষ্টিতে রাস্তার ক্ষতি হলে দ্রুত সড়ক মেরামতের জন্য চট্টগ্রাম ও দোহাজারি সড়ক বিভাগের অধীনে ১০টি মোবাইল টিম কাজ করছে।

পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, জনপথ বিভাগ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, সড়ক পরিবহন শ্রমিক মালিক নেতৃবৃন্দ মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন।