গণপিটুনির ঘটনা ভিডিও করলেও ব্যবস্থা: চট্টগ্রামের এসপি

গণপিটুনির ঘটনা যারা ভিডিও করবে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2019, 10:39 AM
Updated : 25 July 2019, 10:39 AM

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, “সারাদেশে গণপিটুনির ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে ১০০ জনেরও বেশি। আমরা সবাইকে বলছি আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে পুলিশকে জানাতে।”

গুজব রটনাকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “যারা গণপিটুনিতে অংশ নেবে এবং যারা তামাশা দেখে ভিডিও ধারণ করবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা গুজব বন্ধে পুলিশের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের পাশাপাশি আরও অনেকগুলো সংস্থার কাজ করা দরকার। আমরা আহ্বান জানাই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে এগিয়ে আসার জন্য।

“তাদের একটি বড় দায়িত্ব আছে। তাদের যেসকল কর্মকর্তা আছে তারা শিক্ষকদের নির্দেশনা দেবেন শিক্ষার্থীরা যেন ভয় না পেয়ে ক্লাসে আসে। আমরা এগিয়ে এসেছি, তারাও যেন এগিয়ে আসে আমাদের সাথে।”

স্থানীয় সরকার বিভাগকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বলেন, “এ বিভাগটি বড় স্টেক হোল্ডার। তাদের স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম পুলিশ এলাকার সবাইকে চেনে। তাদের এলাকায় কে আগুন্তক, কারা কী করতে পারে তারা জানেন। এমনকি এলাকায় কারা মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং যারা ভিকটিম হচ্ছে তারা কেমন চেয়ারম্যান, মেম্বাররা জানেন। তাই তাদেরও এগিয়ে আসা দরকার।”

চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে পিটুনির ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামের এসব ঘটনায় মামলার তথ্যও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন পুলিশ সুপার।

তিনি জানান, গত ২০ জুলাই সীতাকুন্ড উপজেলার ফৌজদার হাটে ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।

২২ জুলাই বাঁশখালীর ইলশা গ্রামে ছাগল কিনতে যাওয়া তিন ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় ছয়জনের নামে মামলা হয়েছে, এর মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

একই দিন বানীগ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে। সেখানে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সাতকানিয়ার কেরানী হাটে একই ধরনের ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়েছে বলে তথ্য দেন পুলিশ সুপার।

২০১৩-১৪ সালে দেশে পেট্রোল বোমা, ২০১৬-১৭ সালে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সফল হতে না পেরে ছেলেধরা গুজব রটানো হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

গুজব ঠেকাতে বিভিন্ন ধরনের প্রচারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে লিফলেটও বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান নূরে আলম মিনা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) একেএম এমরান ভূঁইয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌল্লাহ রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আফরুজুল হক টুটুল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল।