লোকসানি ব্যবসা গুটিয়ে ছিনতাইয়ে

একসময় তার ফল আর কাচের দোকান ছিল। কিন্তু লোকসান গুণতে থাকায় ব্যবসা গুটিয়ে নাম লেখান ছিনতাইকারী হিসেবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2019, 01:19 PM
Updated : 21 July 2019, 01:19 PM

চট্টগ্রামে অস্ত্রসহ মনির আহম্মেদ (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছে চট্টগ্রাম নগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের অন্যতম হোতা তিনি।

মনিরের বাড়ি ফটিকছড়ি হাইদচকিয়া ইউনিয়নের। থাকেন নগরীর বন্দর থানার সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায়।

নগরীর খুলশী থানার টাইগার পাস এলাকা থেকে শনিবার রাতে একটি দেশি তৈরি বন্দুক ও দুই রাউন্ড গুলিসহ মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইলিয়াছ খান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম নগরীসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে যত ছিনতাই হয় তার মাস্টার মাইন্ড মনির। একসময় ব্যবসা করার সুবাদে তার বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে। সেসব ব্যাংকে গিয়ে কোন লোক টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয় তার খোঁজ নেয়।”

পরে তার দেওয়া তথ্য মতে সহযোগীরা পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করে বলে পরিদর্শক ইলিয়াছের ভাষ্য।

তিনি বলেন, গত ২১ মে খুলশী থানার ঝাউতলা এলাকায় ডিবি পরিচয়ে এক বাসযাত্রীর কাছ থেকে তিন লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় একদল লোক। ওই ঘটনায় সম্পৃক্ততা আছে মনিরের।

তিনি আরও জানান, মনিরের দলটিতে সাদ্দাম, হারাধন, জাহেদ, রাজীব, আরিফ, বড় মিয়া, মামুনসহ আরও কয়েকজন আছে।

গত ২৪ মে ঝাউতলা এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আহত হয়েছিলেন মামুন। ওই মামলায় জাহেদ, আরিফ, মামুনসহ চারজন কারাগারে আছেন।

খুলশীর ঘটনায় জড়িত থাকার কথা মনির স্বীকার করেছেন বলেও জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা ইলিয়াছ।

পুলিশ তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন চকবাজার এলাকায় ফল এবং বাকলিয়া কালামিয়া বাজার এলাকায় গ্লাসের দোকান করেছেন মনিরের। কিন্তু লোকসান হতে থাকায় ২০১০ সালের দিকে ব্যবসা গুটিয়ে ছিনতাইয়ে নেমে পড়েন।

‘পাগলা মনির’ নামে পরিচিতি থাকা মনির শিবিরের রাজনীতিও করতেন বলে কথিত আছে চকবাজার এলাকায়।

নিজের মোটর সাইকেল থাকায় সেটা নিয়ে নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী বায়েজিদ এলাকার শাহাবউদ্দিনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়েন মনির। ২০১১-১২ সালের দিকে দুইজন মিলে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ছিনতাই করতেন।

২০১৭ সালে হাটহাজারীতে ডিবি পরিচয়ে ৩১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মনির। একই বছর চান্দগাঁও এলাকায় ১১ লাখ টাকা ছিনতাইয়েও জড়িত থাকার অভিযোগ আছে মনিরের বিরুদ্ধে।

পুলিশ পরিদর্শক ইলিয়াছ বলেন, হাটহাজারী ও চান্দগাঁও থানার মামলায় প্রায় ছয় মাস জেলে খেটে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি জামিনে ছাড়া পেয়ে মনির বায়েজিদ এলাকায় সাড়ে নয় লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।