টানা বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন বন্দর নগরী

ভারি বর্ষণে ছয় দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় ডুবল বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2019, 07:44 AM
Updated : 13 July 2019, 07:45 AM

শনিবার দুপুর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও এলাকায় পানি জমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

পাশাপাশি বায়েজিদের আরেফিন নগর এবং কুসুমবাগ আবাসিক এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। এতে কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন।

সকাল থেকে নগরীর বহদ্দারহাট, মোহাম্মদপুর, মুরাদপুর, ষোলশহর, বাদুরতলা, কাপাসগোলা, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, জিইসি, ওয়াসা, প্রবর্তক মোড়, হালিশহর আবাসিক এলাকার মূল সড়ক, আই ব্লক, এসি মসজিদ, ওয়াপদা, গাউসিয়া এলাকা, অলংকার মোড়, বিমানবন্দর সড়কের সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

নগরীর এসব এলাকায় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ। কোনো কোনো রাস্তায় দুয়েকটি যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলছে।

প্রধান সড়কগুলোতে পথচারীদের মূল ভরসা এখন রিকশা। তিন-চারগুণ ভাড়ায় রিকশা ও ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা।

নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

হালিশহরের বাসিন্দা মামুন হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগ্রাবাদ যাওয়ার জন্য সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে দেখি রাস্তায় পানি জমে আছে। এরমধ্যে হেঁটেই পোর্ট কানেকটিং রোডে আসি।

“আগ্রাবাদ এক্সেস সড়কের বেহাল দশা। ওই রাস্তায় জলাবদ্ধতা না থাকলেও আছে বড় বড় গর্ত। সেসব গর্তে পানি জমে আছে।”

নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা সাইফুল আলম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এন মোহাম্মদ এলাকায় সড়কের উপর পানি জমেছিল। জঙ্গী শাহ মাজার হয়ে কাপাসগোলা, বাদুরতলা এমনকি কাতালগঞ্জের কয়েকটি সড়কের পানি ছিল। চকবাজার এলাকায় হাঁটু পানি জমে গেছে।

এর আগে শুক্রবার রাত ৯টা থেকে নগরীতে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে বৃষ্টির বেগ। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে বর্ষণ।

এর আগে গত ৮ জুলাই (সোমবার) ভারি বর্ষণে বন্দর নগরীর বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গিয়েছিল। ৬ জুলাই রাত থেকে চট্টগ্রামে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। এরমধ্যে শুক্রবার দিনের বেলায় বৃষ্টি কিছুটা কম ছিল।

এদিকে গত সোমবার থেকে জমে থাকা পানি নগরীর কয়েকটি এলাকা থেকে নামেনি।

এরকম এলাকাগুলোর মধ্যে আছে চান্দগাঁও পাঠানিয়া গোদা, খড়ম পাড়া, চকবাজার মোহাম্মদ শাহ আলী লেন, হাসমত উল্লাহ মুন্সেফ লেন, বাদুরতলা মাজার গেট সংলগ্ন কয়েকটি গলি।

এসব এলাকায় শনিবার পানির উচ্চতা আরও বেড়েছে। এতে এখানকার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ দশমিক দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ডের কথা জানিয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের ডিউটি এসিট্যান্ট প্রদীপ কান্তি রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আরও অন্তত দুই দিন বৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি ভর্ষণের সর্তকতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

পাশাপাশি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের বিভাগের কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে বলেও আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্তকবার্তায় জানানো হয়।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আরেফিন নগরে মাঝেরঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে দুইজন মাটির নিচে চাপা পড়েন। তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

“কুসুমবাগ এলাকায় দুটি পাহাড় ধসে পড়েছে। সেখানে এক শিশুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আর কেউ মাটিচাপা অবস্থায় আছে কি না তা সন্ধান করা হচ্ছে।”