দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টায় পাড়ায় পাড়ায় ‘হ্যালো ওসি’

জনগণের কথা শুনতে পাড়ায়-মহল্লায় হাজির হচ্ছেন থানার ওসি।‘হ্যালো ওসি’ বুথ খুলে সেখানে বসে শুনছেন অভিযোগ, চেষ্টা করছেন সমস্যা সামাধানের।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2019, 07:58 AM
Updated : 11 July 2019, 08:08 AM

চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন শুরু করেছেন ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ। বুধবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া এ উদ্যোগে তিনি এলাকাবাসীর সাড়াও পাচ্ছেন।

প্রথমদিন ওসি হাজির হয়েছিলেন নগরীর চৌদ্দ জামতলা এলাকায়। মাদকের আখড়া হিসেবে কুখ্যাতি থাকা ওই এলাকার লোকজন বুথে গিয়ে ওসিকে বলেছেন তাদের অভিযোগের কথা। তাদের কাছ থেকে মাদক কারবারিদের বিষয়েও তথ্য পেয়েছে পুলিশ। 

দুই মাদক চোরাকারবারি এবং এক মাদকসেবী প্রকাশ্যেই বলেছেন, তারা ফিরে আসতে চান স্বাভাবিক জীবনে। রোজগার করতে চান সৎ পথে। 

কোতোয়ালির ওসি মহসিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “থানা-পুলিশের বিষয়ে সাধারণ মানুষের একটা ভীতি কাজ করে। মানুষ থানায় যেতে কিংবা ওসির কাছে যেতে ভয় পায়। এ কারণে সাধারণ মানুষের সাথে থানা পুলিশের একটা দূরত্ব আছে।”

সেই দূরত্ব কমাতে এবং মানুষ যাতে সরাসরি থানা কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে তাদের সমস্যার কথা বলতে পারেন, সেজন্য নিজেই এলাকার গিয়ে লোকজনের সামনে হাজির হচ্ছেন বলে জানান ওসি।

“আমি ঠিক করেছি, প্রতি সপ্তাহে আমার থানার আওতাধীন একটি করে এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলব। বিট পুলিশ অফিসারের মাধ্যমে সেখানকার লোকজনকে আগে থেকে বলে রাখছি তারা যেন কথা বলতে আসেন “

এর অংশ হিসেবে চৌদ্দ জামতলা বস্তিতে প্রথম বৈঠকে বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন ওসি।

সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “ওই এলাকাটি মাদক ব্যবসায়ীদের স্পট হিসেবে পরিচিত। অথচ বেশিরভাগ মানুষ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। তারা সাহসের সাথে কথা বলেছে আমার সাথে। তারা পুলিশকে কীভাবে তথ্য দেবেন সে প্রক্রিয়াটিও শিখিয়ে দিয়েছি।”

জামতলা বস্তির বাসিন্দা ফাতেমা বেগম তার মাদকসেবী ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ‘ভালো করার’ জন্য। তার ছেলে রমজান মিয়াও পুলিশকে বলেছেন, তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চান।

আফসার উদ্দিন শাকিল নামে জামিনে থাকা এক মাদক চোরাকারবারি ওসির বুথে গিয়ে বলেছেন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ইচ্ছের কথা। তাকেও সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন ওসি।

তিনি বলেন, “জামিন নেওয়ার পর ঢাকায় পালিয়ে থাকা জাহেদুল ইসলাম জনি নামে এক মাদক ব্যবসায়ী তার মা ও বোনের মাধ্যমে আমাকে জানিয়েছে, সেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়। আমরা তাকেও আশ্বস্ত করেছি, আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করব।”