উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোবারক হোসেন।
বাজালিয়া থেকে বান্দরবানের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। প্রতিবছরই ভারি বৃষ্টিতে ওই এলাকা তলিয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সাতকানিয়ার ইউএনও মোবারক হোসেন বলেন, কোরনীহাট ও বায়তুল ইজ্জতের মাঝামঝি স্থানটি নিচু হওয়ায় সেখানে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি উঠে যায়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বান্দরবান প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বাজালিয়ায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি।
বান্দরবানে সেন্টমার্টিন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “সকাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি। আবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে ওই এলাকায়।”
সৌদিয়া পরিবহন কাউন্টার ম্যানেজার মোজাম্মেল বলেন, সকাল ছয়টার আগে ঢাকার উদ্দেশে একটি বাস ছাড়লেও সড়কে পানি বেড়ে যাওয়ায় পরে তাদের আর কোনো বাস ছাড়া হয়নি।
রাতে যদি পানি কমে তাহলে বাস ছাড়া হবে বলে জানান তিনি।
বান্দরবান থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করছে না পূরবী ও পূর্বাণী বাসও।
জেলা বাস মালিক সমিতির প্রতিনিধি নিখিল কান্তি দাশ বলেন, “সড়কে কোমর সমান পানি। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আপাতত গাড়ি চালানো বন্ধ রয়েছে।”
চ্টগ্রাম থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বান্দরবানে আসা দুই যাত্রী জানান, কিছুটা পথ কষ্ট করে আসা গেলেও বাজালিয়ায় এসে তাদের গাড়ি আটকে যায়। সড়কে পানি বেশি থাকায় চালকরা ঝুঁকি নিয়ে যেতে চায় না।
বাধ্য হয়ে সেখানে নেমে যাত্রীদের রিকশা কিংবা ভ্যানের শরণাপন্ন হতে দেখা গেছে।
এদিকে বৃষ্টিতে সাতকানিয়া উপজেলার চরতি, এওচিয়া, আমিলাইশসহ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তবে মঙ্গলবার বৃষ্টি হলে ঘরবাড়িতেও পানি উঠে যেতে পারে বলে তার শঙ্কা।
উপজেলায় এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীতে ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আমবাগান আবহাওয়া অফিস।
আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন পতেঙ্গার আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম।
এদিকে চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা থেকে ভূমি ধসের খবরাখবর আসলেও এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে হোসনাবাদ ও কোদালা ইউনিয়নে মাটি ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
রাঙ্গুনিয়া-বান্দরবান নতুন সড়কে মাটি ধসের ঘটনা ঘটলেও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের নিয়ে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে বান্দরবানে বৃষ্টিতে পাহাড় ধস ও যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জেলা প্রশাসন। জেলায় ১২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম।