কর্ণফুলী তীরে বন্দরের অবৈধ স্থাপনা ৩ সপ্তাহে উচ্ছেদের নির্দেশ

কর্ণফুলী নদী পাড়ে চট্টগ্রাম বন্দরের যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে, তা উচ্ছেদ করে তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিতে বলেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2019, 04:27 PM
Updated : 4 July 2019, 04:27 PM

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বন্দরের চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিন মাস আগের একই আদেশ বাস্তবায়ন না করায় বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দেন আইনজীবী কে এস সালাহ উদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী রানী শর্মা ও পূরবী রানী সাহা।

মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাস্তবায়ন প্রতিবেদন না দিতে পারায় আদালত বন্দর কর্তৃপক্ষের আইনজীবীকে বলেছেন, আপনাদের তো আদেশ বাস্তবায়ন করে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। আদেশ আংশিক বাস্তবায়ন করে যদি বলতেন বাকিটা আমি করতে পারি নাই, তাহলে আমরা সেটা গ্রহণ করতাম। কিন্তু যে হলফনামা দিয়েছেন, সেটা তো গ্রহণ করতে পারি না।”

রিট আবেদনকারী পক্ষের এই আইনজীবী বলেন, “ওরা প্রথমে বলছে, অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করতে যে জরিপটা হয়েছে সেটা আরএস রেকর্ড অনুযায়ী হয়েছে। আর এস অনুসারে জরিপ করাটা ঠিক হয়নি। বিএস রেকর্ড অনুযায়ী হওয়া উচিৎ ছিল। তাছাড়া ওইখানে একটা প্রাইভেট কনটেইনার আছে ২২ একর জমির উপরে। ৩ একর জমির যে অবৈধ স্থাপনা বলা হয়েছে, তা ওই কনটেইনারটির একটি অংশ পড়েছে। ফলে উচ্ছেদ হলে কনটেইনারটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারের বিরাট ক্ষতি হবে এবং পোর্টেরও বিরাট সমস্যা হবে।”

আরএস অনুযায়ী যে জরিপ হয়েছিল সেটি যৌথভাবে জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ মিলেই করেছিল উল্লেখ করে মনজিল বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষের এ বক্তব্য শুনে আদালত বলেছে, এসব এখন বলার সুযোগ নেই। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতেই হবে।”

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বন্দর কর্তৃপক্ষ অরেকটি ব্যাখ্যা উদ্বৃত করে মনজিল বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে যে তারা উচ্ছেদ করতে চায়, কিন্তু প্রভাবশালীদের বিভিন্ন চাপে তারা পারছেন না। তখন আদালত বলেছে, হাই কোর্টের রায় হওয়ার পরে প্রভাবশালীদের কী আছে না আছে, সেটা দেখার বিষয় না। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতেই হবে।”

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী রানী সাহা বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় আগের আদেশটিই বাস্তবায়ন করে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।”

কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হাঠৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)’র পক্ষে আবেদনে গত ৯ এপ্রিল কর্ণফূলী নদী পাড়ে চট্টগ্রাম বন্দরের যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে তা উচ্ছেদ করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছিল হাই কোর্ট।

বন্দরের চেয়ারম্যান ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে সেগুলো আর এস জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী উচ্ছেদ করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে ১৯ মে পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছিল।

সেটিই বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য উঠার পর এ আদেশ এল।