পাশাপাশি যে ফার্মেসিতে তিনি ‘রোগী দেখতেন’, সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ পাওয়ায় তার মালিক ফরিদুল আলমকেও তিন মাসের কারাদণ্ড ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার রাতে দক্ষিণ পতেঙ্গার বিজয় নগর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ডায়বেটিস, মেডিসিন ও শিশু রোগের চিকিৎসক পরিচয়ে বিকিরণ চাকমা তিন বছর ধরে ওই এলাকায় ‘রোগী দেখছেন’।
“একজন র্যাব সদস্য রোগী হিসেবে তার সিরিয়াল নেন। সন্ধ্যায় আয়েশা ফার্মেসির ওই চেম্বারে গিয়ে দেখতে পাই বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু অপেক্ষমান।”
তাহমিলুর রহমান বলেন, “এক পর্যায়ে র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচলক সিনিয়র এএসপি মিমতানূর রহমান রোগী হিসেবে চেম্বারে প্রবেশ করেন। এসময় তার ডিগ্রি সম্পর্কে র্যাব কর্মকর্তা জানতে চাইলে বিকিরণ বলেন তার সনদ ঢাকায়, সেগুলো আনতে দুই দিন সময় লাগবে।”
এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান এবং চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি চেম্বারে প্রবেশ করেন।
তাহমিলুর রহমান বলেন, “তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানতে চাইলে যে নম্বরটি দেন সেটি বিএমডিসির ওয়েব সাইটে নেই।
“পরে জিজ্ঞাসাবাদে আবার বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ভারতের একটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। কিন্তু সেখানকার কোনো সনদও দেখাতে পারেননি।”
বিকিরণ বড়ুয়ার ভিজিটিং কার্ড এবং প্রেসক্রিপশন প্যাডে নিজেকে ‘কাস্টমস হাউজের মেডিকেল অফিসার’ উল্লেখ করলেও তার কোনো সত্যতা পায়নি অভিযানকারী দল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, কোনো ধরনের চিকিৎসা বিষয়ক সনদ ছাড়াই সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
“ওই এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। এর সুযোগ নিয়ে ডাক্তার পরিচয়ে ২০০ টাকা ভিজিটের বিনিময়ে রোগী দেখতেন বিকিরন।”
অন্যদিকে আয়েশা মেডিকেল ফার্মেসি নামের দোকানটির কোনো লাইসেন্স পায়নি ভ্রাম্যমাণ আদালত। তল্লাশী চালিয়ে দোকানে অননুমোদিত এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ প্রায় চার বস্তা ওষুধ জব্দ করা হয়। পাওয়া যায় নষ্ট হয়ে যাওয়া আইভি স্যালাইন ও ওষুধ।
একারণে ফার্মেসিটির মালিক ফরিদুল আলমকে জেলা-জরিমানা করা হয়।