মিরসরাইয়ের সাগরে লাশ, চীনা কোম্পানির কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামের মিরসরাই ইকোনমিক জোনে সাগর থেকে এক ঠিকাদার কোম্পানির নিরাপত্তা কর্মকর্তার চোখ উপড়ানো ও কান কাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় একটি বিদেশি কোম্পানির কর্মীদের দায়ী করে মামলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2019, 09:12 AM
Updated : 17 June 2019, 09:12 AM

শিল্পাঞ্চলে ভূমি উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনস লিমিটেডের পক্ষ থেকে রোববার গভীর রাতে জোরারগঞ্জ থানায় দায়ের করা এ মামলায় ইকোনমিক জোনের মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির এক্সকেভেটর অপারেটরসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী সুপার (মিরসরাই সার্কেল) মো. শামসুদ্দীন সালেহ আহম্মদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার এজাহারে আসামিদের কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে তারা সবাই চীনা নাগরিক বলে ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনস লিমিটেডের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।”  

মিরসরাই উপজেলায় ইছাখালী ইউনিয়নের চর সড়ক গ্রামের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর এলাকার সাগর থেকে রোববার দুপুরে নান্নু মিয়া (৪৫) নামের ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনস লিমিটেডের নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইঞ্জিন বোট পরিচালনা করতেন সেনাবাহিনীর সাবেক ল্যান্স কর্পোরাল নান্নু।

ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনস লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার ও ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদের দায়ের করা মামলার বলা হয়, শিল্পাঞ্চলের মাটি ভরাট কাজের জন্য সাগরে তাদের ড্রেজার কাজ করছে। তাদের কর্মীরা প্রকল্প সংলগ্ন বামন সুন্দর খাল দিয়ে ইঞ্জিন বোটে করে ড্রেজিং এলাকায় যাতায়াত করেন।

এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত ১৪ জুন বিকালে ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনসের একটি বোট বামন সুন্দর খালে প্রবেশের সময় চায়না হারবারের এক্সকেভেটর অপরাটের ‘বিনা উস্কানিতে’ আক্রমণ করে। তিনি এক্সকেভেটরের বাকেট দিয়ে আঘাত করতে চাইলে বোট অপারেটর ফারুক হোসেন বোট ফেলে চলে আসেন। পরে চায়না হারবারের কর্মচারীরা বোটটি পানি থেকে তুলে শুকনো জায়গায় রেখে দেয়।

“বিষয়টি পুলিশ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও মেরিন ড্রাইভের প্রকল্প পরিচালক জুলফিকার তারেককে জানানো হয়। জুলফিকার তারেক বোটটি নিয়ে আসতে বললে নান্নুসহ পাঁচজন কর্মী রাত সোয়া ৯টার দিকে ওই জায়গায় যায়। তারা বোটটি পানিতে নামানোর সময় চায়না হারবারের ২০-২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা দিয়ে তাদের মারধর করে।”

ওই সময় অন্যরা পালিয়ে আসতে পারলেও নান্নু মিয়াকে চায়না হারবারের লোকজন আটকে রাখে বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

রোববার স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সাগর থেকে নান্নু মিয়ার লাশ উদ্ধারের খবর জানায় পুলিশ।

জোরারগঞ্জ থানার এসআই মাহফুজ আহমেদ সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নান্নুর দুই চোখ উপড়ানো, দুই কান কাটা ছিল। এছাড়া শরীরে লোহার রডের আঘাত এবং ঠোঁটের নিচে কাটা ক্ষত দেখেছেন তারা।

ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনসের অভিযোগের বিষয়ে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কারও বক্তব্য জানতে পারেনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।