চট্টগ্রামে ঈদবাজারে সক্রিয় নারী চোরেরা, আছে রোহিঙ্গারাও

চট্টগ্রামে ঈদবাজারে বেড়েছে নারী চোরদের দৌরাত্ম্য, যাদের সাথে যুক্ত হয়েছে কিছু রোহিঙ্গা নারীও।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2019, 12:27 PM
Updated : 26 May 2019, 12:28 PM

পুলিশ বলছে, ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে অনেক নারী চট্টগ্রামের বাইরে থেকে এসেছে। বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতার বেশে ঘুরে বেড়ায় এসব নারী। সুযোগ বুঝে কেনাকাটা করতে আসা নারী ক্রেতাদের ব্যাগ থেকে হাতিয়ে নেয় টাকা ও মোবাইল।

গত দুইদিনে চট্টগ্রামের টেরিবাজার ও সিনেমা প্যালেস থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য তারা ‘মৌসুমি পকেটমার’। ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার থেকে ঈদ বাজারকে টার্গেট করে চট্টগ্রামে এসেছিলেন।

চুরির জন্য এ ধরনের নারীদের আনাগোনা বেশি টেরিবাজার, রেয়াজউদ্দিন বাজার, হকার্স মার্কেটসহ কোলাহলপূর্ণ মার্কেটগুলোতে।

কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদ বাজারকে সামনে রেখে কিছু নারী পকেটমার চট্টগ্রামের বাইরে থেকে এখানে এসেছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। তাদের ধরতে আমাদের নজরদারি ও অভিযান চলমান আছে।”

এসব নারী মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা ও কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে এসেছে বলে জানান ওসি।

এ পকেটমারদের সাথে এখন রোহিঙ্গা নারীরাও যুক্ত হয়ে পড়েছে বলে পুলিশ জানায়।

পুলিশের তথ্য, নগরীতে নারী পকেটমারদের কয়েকটি চক্র আছে। যাদের সবার বাড়ি মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে। এদের সাথে রোহিঙ্গা নারীরাও যুক্ত হয়েছে।

গত ২৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে এক নারী সাংবাদিকের স্বর্নের চেইন নেওয়ার সময় ধরা পড়েন দুই নারী, যারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরের বাসিন্দা।

তাদের মধ্যে রুবিনা নামের এক নারী জানিয়েছিলেন, প্রতি সপ্তাহে তার চট্টগ্রামে আসতে হয় মামলার হাজিরা দিতে। এ সময় সুযোগ বুঝে ব্যাগ থেকে মোবাইল, চেইন, টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার রাতে সিনেমা প্যালেস এলাকা থেকে নুর ফাতেমা নামে ২০ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা তরুণীকে আটক করা হয়।

তার কাছ থেকে উদ্ধার করা চারটি মোবাইল ফোনের মধ্যে দুইটি মোবাইল ফোন তিনি শনিবার সন্ধ্যায় ও অপরটি গত ১৬ মে দুই নারীর কাছ থেকে চুরি করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, “শনিবার রাতে হকার্স মার্কেট থেকে এক তরুণীর ব্যাগ থেকে মোবাইল ফোন খোয়া যায়।

“ফাতেমার কাছ থেকে উদ্ধার করা একটি ফোনে রাত দেড়টার দিকে ওই তরুণীর ফোন আসে। পরে থানায় এসে ওই তরুণী ও তার স্বজনরা মোবাইল ফোন সেট শনাক্ত করে।”

এছাড়া ফাতেমার কাছ থেকে উদ্ধার করা আরেকটি মোবাইল ফোন থেকে কল করে আরেক নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, যিনি গত ১৬ মে তার মোবাইল সেট খোয়া যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

ওই নারীও থানায় এসে তার মোবাইল ফোন শনাক্ত করেন এবং ফাতেমার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এদিকে শুক্রবার বিকালে টেরিবাজার এলাকায় এক নারীর ব্যাগ থেকে মোবাইল ফোন সেট সরানোর সময় রত্না নামের এক নারীকে আটক করে পুলিশে দেয় লোকজন।

রত্নার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর হলেও থাকেন ঢাকায়।  

ওসি মহসিন বলেন, “টেকনাফের হ্নীলা শরনার্থী শিবির থেকে ফাতেমা ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে এসেছেন। আর রত্মা ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসেছে বলে আমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। তারা ঈদ মার্কেটকে কেন্দ্র করে পকেটমার করে।”