হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ, সংগ্রহ কম

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2019, 08:21 AM
Updated : 26 May 2019, 08:26 AM

শনিবার রাত নয়টা থেকে রোববার সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাউজান ও হাটহাজারী অংশে নদীর আজিমের ঘোনা, অংকুরি ঘোনা, রাম দাশ মুন্সীর ঘাট, সত্তারঘাট, মাছুয়া ঘোনা, কাগতিয়া, গড়দুয়ারাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম সংগ্রহ চলে।

তবে গতবারের চেয়ে এবার কম ডিম পাওয়া গেছে বলে একজন গবেষক।

হালদা নদীতে প্রতি বছর এ সময়ে কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ে। ডিম সংগ্রহের পর এখন চলছে ডিম ফুটিয়ে রেণু তৈরির কাজ।

হালদা গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এবার রাত নয়টা থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে কার্পজাতীয় মাছ। এরপর রাত ১১টা থেকে নৌকায় করে আহরণকারী ডিম সংগ্রহ শুরু করেন।

সংগ্রহ করা ডিম থেকে হচ্ছে রেণু

এবছর ২৩০টি নৌকায় প্রায় পাঁচশ’র মতো আহরণকারী ডিম সংগ্রহ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের হিসাবে তারা সাড়ে সাত হাজার কেজির মতো ডিম সংগ্রহ করেছেন, যা গতবারের চেয়ে অনেক কম।

তবে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুর আমীনের মতে, প্রায় ১০ হাজার কেজির মতো ডিম সংগ্রহ হয়েছে।

গত বছর ডিম সংগ্রহ হয়েছিল ২২ হাজার ৬৮০ কেজি। আর সেখান থেকে রেণু পাওয়া গিয়েছিল প্রায় ৩৭৮ কেজি।

সংগ্রহ করা ডিম থেকে হচ্ছে রেণু

বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, প্রতি ৬০ কেজি ডিমে রেণু মিলবে এক কেজি। সে হিসেবে এবারে সংগৃহীত ডিম থেকে ২১৬ কেজির মতো রেণু হতে পারে বলে মনে করছেন অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া।

তিনি বলেন, “গতবারের চেয়ে ডিম অনেক কম। পুনরায় হালদা নদীতে মা মাছ ডিম দেবে কিনা তা ওপর নির্ভর করবে রেণু কতটুকু পাওয়া যাচ্ছে।”

এদিকে ডিম আহরণের পর সংগ্রহকারীরা রেণু তৈরির কাজ শুরু করেছেন সরকারি তিনটি হ্যাচারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডিম ফোটানোর কাজে সহযোগিতার জন্য সরকারি তিনটি হ্যাচারির ১১৩টি কুয়া প্রস্তুত আছে। এর বাইরে ব্যক্তিগত পর্যায়ে মাটির তৈরি ১৪১টি কুয়াতেও চলছে ডিম ফোটানোর কাজ।”

সংগ্রহ করা ডিম থেকে হচ্ছে রেণু

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সাধারণত বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পূর্ণিমা-অমাবস্যার সময়ে পাহাড়ি ঢলের পানির সাথে বজ্রসহ বর্ষণ হলে এবং নদীর তাপমাত্র অনুকূলে থাকলে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউশ জাতীয় মা মাছ ডিম দেয়।

এই হালদা নদীকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র বলা হয়ে থাকে।

সরকারি হিসাবে, ২০১২ সালে হালদা থেকে সংগৃহীত ডিমে রেণু মিলেছিল প্রায় ১৬শ কেজি, ২০১৩ সালে ৬২৪ কেজি এবং ২০১৪ সালে তা নেমে দাঁড়ায় পাঁচশ কেজিতে।