পায়েল হত্যা: সাক্ষ্য দিলেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক

নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সাইদুর রহমান পায়েল হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গাজীপুর জেলা হাসপাতালের আরএমও সাখাওয়াত হোসেন।  পায়েলের মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন এই চিকিৎসক। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2019, 10:17 AM
Updated : 20 May 2019, 10:17 AM

সোমবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আবদুল হালিমের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আইয়ুব খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই চিকিৎসক তার সাক্ষ্যে ময়নাতদন্ত করার সময়ের বর্ণনা এবং প্রতিবেদনে যা আছে সে বিষয়ে আদালতকে জানিয়েছেন।

পরে ডা. সাখাওয়াতকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী । 

সাক্ষ্য-জেরা শেষে আদালত আগামী ২৬ মে এ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যর দিন ধার্য করেছে। 

এর আগে ১২মে এ মামলায় মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানার এসআই ও পায়েলের লাশের সুরতহালকারী সফর আলী, পোস্টমর্টেমের জন্য লাশ নিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্য আসাদুজ্জামান আদালতে সাক্ষ্য দেন। 

এরও আগে ৬ মে পায়েলের মামা ও ভগ্নিপতি এবং ২৮ এপ্রিল পায়েলের মা কোহিনূর বেগম আদালতে সাক্ষ্য দেন। 

পায়েলের দুই বন্ধু আকিবুর রহমান আদর ও মহিউদ্দিন শান্তও সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত বছরের ২১ জুলাই রাতে ওই দুই বন্ধুরর সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পরই নিখোঁজ হন পায়েল।  ২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জ উপজেলার ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে পায়েলের লাশ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা পুলিশ। 

এরপর হানিফ পরিবহনের ওই বাসের সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল এবং চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আদালতে তাদের জবানবন্দির বরাতে পুলিশ জানায়, গজারিয়া এলাকায় গাড়ি যানজটে পড়ায় প্রসাব করার কথা বলে বাস থেকে নেমেছিলেন পায়েল। বাস চলতে শুরু করলে তিনি দৌড়ে এসে ওঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সংজ্ঞা হারান। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে দায় এড়াতে ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে বাস নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন চালক ও সুপারভাইজার।

পায়েলকে অচেতন অবস্থায় সেতু থেকে খালে ফেলে দেওয়ার আগে পরিচয় লুকাতে হানিফ পরিবহনের বাসের চালক তার মুখ থেঁতলে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

সাইদুর রহমান পায়েলের বাবা গোলাম মাওলা ও বড় ভাই গোলাম মোস্তফা কাতার প্রবাসী। বড় ভাইয়ের সন্তান হওয়ার খবরে জুলাই মাসে চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন পায়েল। সেখান থেকে ঢাকায় ফেরার পথেই ঘটে ওই ঘটনা। 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র পায়েলের বাসা চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায়। 

পায়েলকে হত্যার ঘটনায় তার মামা গোলাম সরোয়ার্দী বিপ্লব বাদী হয়ে চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারকে আসামি করে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। 

গজারিয়া থানার পুলিশ ওই তিনজনকে আসামি করে ৩ অক্টোবর অভিযোগপত্র জমা দেয়। মুসিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। 

পরে পায়েলের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ মামলাটি চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে।