শুক্রবার নদীর ছত্তারঘাট সংলগ্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয় বলে হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সকালে এক ব্যক্তি আমাদের ফোন করে। সে বলে, ‘আপনি তো আমাদের ইঞ্জিন নৌকা ধ্বংস করেছেন। এখন নদীতে দুটি নৌকা চলছে’।”
এ খবর পেয়েই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সম্রাট খীসা ছত্তারঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন বলে জানান ইউএনও।
রুহুল আমিন বলেন, ইঞ্জিনচালিত নৌকা দুটি বালি নিয়ে ঘাটের কাছে এসেছিল। দুটি নৌকারই ইঞ্জিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক মাসে মোট ১৪টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ধ্বংস করল কর্তৃপক্ষ।
হালদা নদীতে মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ। প্রাকৃতিক এই মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র থেকে বালি উত্তোলনও নিষিদ্ধ।
গত আড়াই মাসে নদীতে একাধিক মা মাছ ও একটি ডলফিন শাবক মারা যাওয়ার পর হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও হালাদা গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া দাবি করেন, নৌযানের আঘাতেই এসব মা মাছ ও ডলফিনের মৃত্যু হচ্ছে।
২৭ এপ্রিল নদীর হাটহাজারী অংশের গড়দুয়ারা ইউনিয়নের পোড়াকপালি স্লুইস গেইট এলাকায় ১১ কেজি ওজনের একটি মৃত মৃগেল মাছ ভেসে ওঠে। মা মাছটির শরীরে দুটি আঘাতের চিহ্ন ছিল।
এরআগে ১৬ এপ্রিল নদীর মদুনাঘাট সেতু সংলগ্ন এলাকায় একটি ছয়-সাত মাস বয়সী মৃত ডলফিন ভেসে ওঠে। ডলফিনটির শরীরেও ধারালো কিছুর আঘাতের চিহ্ন ছিল।
৯ এপ্রিল নদীর হাটহাজারী অংশের খলিফাঘোনা এলাকায় প্রায় আট কেজি ওজনের মৃত মৃগেল মাছ ভেসে ওঠে। ওই মা মাছের শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল।
এর আগে ৪মার্চ নদীর রাউজান উপজেলার অংকুরীঘোনা এলাকায় ১২ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ এবং হাটহাজারী উপজেলার উত্তর মাদার্শা আমতোয়া এলাকায় তিন কেজি ওজনের একটি আইড় মাছ মারা যায়। এ দুটি মাছের শরীরেও ছিল আঘাতের চিহ্ন।
হালদা নদীতে গত বছরের শুরুতে ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌযানের আঘাতে তিন মাসে মোট ১৬টি ডলফিন মারা যায়। এরপর নদীর বালুমহালগুলো ইজারা দেওয়া বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন।