হলে নেই সিলিং ফ্যান, মধ্যরাতে গরম কমলে তবে ঘুম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হলের চতুর্থ তলার ৪১৫ নম্বর কক্ষ, চার কোণায় ঘুরছে তিনটি টেবিল ফ্যান। তারপরও ঘরে ভ্যাপসা গরম।

আজহারুল ইসলাম জুয়েল, চবি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2019, 08:11 AM
Updated : 5 May 2019, 08:11 AM

গরমে অতিষ্ট শিক্ষার্থীরা স্বস্তির আশায় কক্ষ থেকে বেরিয়ে রওনা হন ছাত্রাবাসের ছাদের দিকে। গভীর রাতে গরম কিছুটা কমলে ঘুমানোর জন্য কক্ষে ফিরবেন। ছাত্রাবাসটিতে গত বুধবার রাতের চিত্র এটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দশটি ছাত্র ও ছাত্রী হলের কোনো কক্ষে সিলিং ফ্যান না থাকাতেই এই ভোগান্তি।  বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থা চললেও হলগুলোতে কেন সিলিং ফ্যান নেই, তার সদুত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসে মোট এক হাজার ৫৭৯টি কক্ষে সিট আছে চার হাজার ২২৬টি।

এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী, এফ রহমান এবং আলাওল হলের অধিকাংশ কক্ষে প্রতি সিটে দুইজন করে শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বেগম খালেদা জিয়া হল, শামসুন্নাহার হল এবং প্রীতিলতা হলের অধিকাংশ কক্ষেও প্রতি আসনে দুইজন করে ছাত্রীকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।  সব মিলিয়ে ১০টি হলে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থীকে থাকতে হয়।

সিলিং ফ্যান না থাকায় ভোগান্তির চিত্র উঠে এসেছে ছাত্রছাত্রীদের ভাষ্যে।

শহীদ আবদুর রব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শান্ত ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হলের ১৮৬টি কক্ষে ৫০৯টি সিট আছে। একটি কক্ষেও সিলিং ফ্যান নেই। যারা টেবিল ফ্যান কিনতে পেরেছে তারা রাতে ঘুমানের চেষ্টা করে। বাকিরা বসে থাকে কখন রাত গভীর হবে সে আশায়। রাত বাড়লে তাপমাত্রা একটু কমে, তখন ঘুমাতে যায়।

“একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমরা। অথচ গরমে আমাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।”

হলের আরেক শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হোসেন টিটন বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিলিং ফ্যান নেই, বিষয়টা আসলেই উদ্ভট। ছোট পাখাগুলো প্রায়ই নষ্ট হয়ে ‍যায়। এই পাখাগুলোতে খরচও বেশি হয়। সিলিং পাখা থাকলে হয়ত একটু শান্তিতে থাকা যেত।”

একই কথা বললেন শাহাজালাল হলের শিক্ষার্থী সাইকুল ইসলাম।

“দুজনের কক্ষে একটি সিলিং ফ্যানই যথেষ্ট হত। কিন্তু ফ্যানের অভাবে বেশিরভাগ দিন গভীর রাত পর্যন্ত কক্ষের বাইরে থাকতে হয়,” বলেন তিনি।

প্রীতিলতা হলের ‘গণকক্ষের’ এক ছাত্রী বলেন, এমনিতেই একটি কক্ষে ১৫-২০ জনকে গাদাগাদি করে থাকতে হয়, তার ওপর সিলিং ফ্যান না থাকায় পুরো কক্ষে দমবন্ধ করা অবস্থা তৈরি হয়।

“টেবিল ফ্যানের বাতাসে শুধু একদিকে লাগে, ঘুমাতে পারি না।”

প্রীতিলতা হলের প্রাধ্যক্ষ পারভিন সুলতানা জানালেন, বহুকাল আগে থেকেই ছাত্রীনিবাসে সিলিং ফ্যান নেই। তবে শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে টেবিল ফ্যান কিনে নিয়েছে।

“কেন সিলিং ফ্যান দেওয়া হয় না সেটা আমি জানি না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ দিলে সিলিং ফ্যান লাগানো হবে।”

ছাত্রদের কক্ষে সিলিং ফ্যান নেই জানিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ মো. বশির আহমদও এর কোনো কারণ জানাতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের  রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ বলেন, হলগুলোতে সিলিং ফ্যান না থাকার বিষয়টি তার জানা নেই।