রোজার আগে বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর বাকলিয়া থানার রাজাখালী এলাকায় এ কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছে পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মীর্জা সায়েম মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোজায় শরবতের উপাদান হিসেবে ট্যাং বেশি ব্যবহৃত হয়। সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র এ ধরনের ভেজাল কারখানা তৈরি করেছে।”
রোজার মাস খানেক আগে এ কারখানাটি তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আলীফ টাওয়ারের তৃতীয় তলায় যেখানে কারখানা তৈরি করা হয়েছে সেখানে আশেপাশে সব ফ্যামিলি ও ব্যাচেলর বাসা।
বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারখানায় চালানো অভিযানে পুলিশ জানতে পারে, রাজাখালী রোডের আলীফ টাওয়ার নামে চারতলা একটি ভবনের তৃতীয় তলায় তিনটি বাসা নিয়ে কারখানাটি তৈরি করেছেন মো. বদরুল আলম।
অভিযানে কারখানা মালিক বদরুল আলমের নাম লেখা ‘সুহা এন্টারপ্রাইজ’ নামে ভিজিটিং কার্ড পায় পুলিশ, যাতে সিয়াম চা, টেস্টিং সল্ট, ট্যাং পাউডারের উল্লেখ রয়েছে।
পাশ্ববর্তী ফারুক বিপণি নামে তৃতীয় তলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় করা হয়েছে কারখানাটির গুদাম ও বোতলজাত করার কারখানা।
কারখানার কর্মচারি পারভেজ বলেন, “সেখানে সাতজন শ্রমিক কাজ করে। তারা চিনির সাথে রঙ, ডালডা সাদৃশ্য রাসায়নিক উপাদান মিশিয়ে শরবতের পাউডারগুলো তৈরি করে।”
আলীফ টাওয়ারের এই কারখানায় চিনি, রঙ ও রাসায়নিক উপাদানগুলো মেশিনের সাহায্যে মিশিয়ে চালুনি দিয়ে গুঁড়ো করা হয়।
“পরে সেগুলো ট্রেতে করে একটি মেশিনে দিয়ে গরম করা হয়। পরে আবার সেগুলো গুঁড়ো করে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্যাকেটজাত করা হয়”, বলেন পারভেজ।
কিছু পাউডার বস্তা ভর্তি করে পাশ্ববর্তী ফারুক বিপণি ভবনে নিয়ে গিয়ে বোতলজাত করা হয় এবং কার্টনে ভর্তি করে বাজারজাত করা হয়।
অভিযানে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইলিয়াছ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারখানাটিতে যারা কাজ করেন তারা সবাই শিশু শ্রমিক। তারা সেখানে থাকেও।”
রঙ, রাসায়নিক উপাদান ও চিনির মিশ্রন ঘটিয়ে পাউডারগুলো তৈরি করার কয়েকটি মেশিন কারখানাতে পেলেও পাউডারগুলো তৈরি করতে কী ধরনের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় তা পুলিশ জানে না; বলেন পুলিশ কর্মকর্তা ইলিয়াছ।
কারখানা থেকে প্রায় চার টন তৈরি পাউডার, ভেজাল চা পাতা, টেস্টিং সল্ট উদ্ধার করা হয়। রাসায়নিক উপাদানগুলো পরীক্ষা করতে পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা ইলিয়াছ।