সভানেত্রীর ইচ্ছায় আরও বড় পদে যেতে চান ছালাম

ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দাঁড়াবেন কিনা তা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে বলে জানালেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বিদায়ী চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2019, 03:54 PM
Updated : 20 April 2019, 03:56 PM

সাংবাদিকদের সাথে শনিবার দুপুরে বিদায়ী মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়াম লীগের কোষাধ্যক্ষ ছালাম এক প্রশ্নে এ কথা বললেন।

দশ বছর সিডিএ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা আবদুচ ছালামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ভবিষ্যতে আরও বড় পদে বা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে কিনা।

জবাবে তিনি বলেন, “মানুষ যতদিন বাঁচে ততদিন স্বপ্ন দেখে, এখানে সুযোগ গুরুত্বপূর্ণ। মেয়র পদে ভবিষ্যতে কে মনোনয়ন পাবেন তা কেউ জানে না। নিজের ইচ্ছার ওপর তা নির্ভর করে না। এক আল্লাহ ও নেত্রীর (শেখ হাসিনা) ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।

“সুযোগ পেলে আলহামদুলিল্লাহ, না পেলেও আলহামদুলিল্লাহ। আমার কোনো বেদনা নেই।”

সিডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে আবদুচ ছালামের মেয়াদ আর বাড়ায়নি সরকার। সম্প্রতি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষকে চেয়ারম্যান হিসেবে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেয় সরকার। আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে দায়িত্ব নেওয়ার কথা তার।

বিদায়ী চেয়ারম্যান ছালাম এর আগে চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসন থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্যও আগ্রহী ছিলেন। এর আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেও মেয়র পদে অংশ নেওয়ার কথাও জোরেশোরে শোনা গিয়েছিল।

২০১৫ সালের নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করাসহ নানা প্রকল্প নিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান ও মেয়রের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।  

আগামী বছর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সে নির্বাচনেও আবদুচ ছালাম প্রার্থিতা চাইতে পারেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে।

এক দশক দায়িত্ব পালন শেষে নিজের আমলে নেওয়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং নিজের ভূমিকা নিয়ে আবদুচ ছালাম ফিরিস্তি দেন।  

তিনি বলেন, “একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে স্বপ্ন ছিল এমপি হব এবং সেজন্য আমি যুদ্ধ করেছি। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় সিডিএর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। তিনি কি কারণে আমাকে বেছে নিয়েছিলেন তা আমি জানি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আমাকে নিয়োগ দিয়ে ভুল করেননি সেটা আমি কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি।

তবে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাসবাসীর কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন এ বর্ষাতেও পূরণ হবে না বলে মনে করেন আবদুচ ছালাম।

তিনি বলেন, আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতা আর চট্টগ্রামবাসীকে স্পর্শ করতে পারবে না।

একইসাথে তিনি বলেন, সিডিএ ২৮টি স্লুইস গেট নির্মাণ করছে, বাকি ১৯টি করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসবে না।

এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ, সিটি করপোরেশন, পাউবো ও সেনাবাহিনী চারটি প্রকল্পে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এসব কাজ শেষ করা না হলে নগরীর জলাবদ্ধতা দূর হবে না।”

এসব কাজের মধ্যে সর্বোচ্চ আট হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ করছে সিডিএ। 

সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষকে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান ছালাম।

তিনি এক প্রশ্নে বলেন, “নতুন চেয়ারম্যান আমার খুবই ঘনিষ্ঠ। উনার সততা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। চলমান প্রকল্পসহ অন্যান্য কাজ উনি আরও গতি নিয়ে যথাসময়ে শেষ করবেন এ প্রত্যাশা করি। চট্টগ্রামবাসীর উন্নয়নের জন্য নতুন চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করব।”

দায়িত্বপালনকালে কোনো ব্যর্থতা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নিজের ব্যর্থতা কেউ কখনও দেখেন না। আমি বাস্তবতায় বিশ্বাস করি। আমার জীবনে ব্যর্থতা বলতে কোনো শব্দ নেই।”

মতবিনিময় সভায় সিডিএর বোর্ড সদস্য কেবিএম শাহজাহান, স্থপতি আশিক ইমরান, গিয়াস উদ্দিন, হাসান মুরাদ বিপ্লব, এম আর আজিম উপস্থিত ছিলেন।