বয়স বাড়িয়ে বাল্যবিয়ের চেষ্টা, ইউএনওর হস্তক্ষেপে বন্ধ

জন্ম নিবন্ধন সনদে ঘষামাজা আর এফিডেভিট করে দুই কিশোরীর বিয়ের আয়োজন করেছিলেন অভিভাবকরা। চট্টগ্রামের হাটহাজারির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা আটকে দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2019, 03:36 PM
Updated : 21 March 2019, 06:40 AM

উপজেলার ফরহাদাবাদ ও দক্ষিণ মেখলে মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার বিকালে ওই দুই কিশোরীর বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের পদক্ষেপে তা আর হয়নি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রুহুল আমিন বলেন, দক্ষিণ মেখলে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী যুবকের বিয়ে ঠিক করেছিল তার পরিবার।

মেয়েটির জেএসসি সনদে জন্ম তারিখ ছিল ২০০৫ সালের ১০ অক্টোবর। আর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেওয়া জন্মসনদে ২০০২ সালের ৪ অক্টোবর।

“ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম সনদে ঘসামাজা করে মেয়েটির পরিবার ২০০২ সালের জায়গায় ২০০০ সাল বানিয়ে বুধবার বিকালে আকদের আয়োজন করে।”

বিষয়টি জানতে পেরে দক্ষিণ মেখল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হাজির হন রুহুল আমিন। 

তিনি বলেন, “তারা মেয়েটির বয়স ঠিক আছে দাবি করলে আমরা অনলাইনে যাচাই করে বয়স ঘসামাজার বিষয়টি দেখতে পাই।” 

পরে পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও।

অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ এলাকায় এক মাদ্রাসা ছাত্রীর সঙ্গে প্রবাসী এক যুবকের বিয়ের আয়োজন করা হয়।

রুহুল আমিন জানান, জন্মসনদ অনুযায়ী মেয়েটির জন্ম তারিখ ছিল ২০০২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।

“বিষয়টি একজন আমাকে টেলিফোনে জানালে আমি প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে সাথে নিয়ে ওই বাড়িতে যাই। সেখানে তারা এফিডেভিট করে মেয়েটির জন্মসাল ২০০০ করার বিষয়টি জানায়।”

কিন্তু জন্মতারিখ পরিবর্তন করার কোনো নিয়ম না থাকায় পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে বিয়ে আটকে দেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। 

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ছেলেদের বয়স ২১ আর মেয়েদের ১৮ না হলে বিয়ে দেওয়া যাবে না। অবশ্য বিশেষ ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি পেলে এই সীমা শিথিল হতে পারে। 

ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার সবচেয়ে বেশি। ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই বাংলাদেশের ৬৬ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়।