তিনি বলেছেন, “উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়নি। কখনো কখনো কৌশলগত বিরতি দিতে হয়। এখন কৌশলগত বিরতিতে আছে।”
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দিন নগরীর সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত কর্ণফুলি নদীর তীর থেকে ২৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
পতেঙ্গা এলাকার মোহনা থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় কর্ণফুলির দুই তীর থেকে দুই হাজার ১১২টি স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা রয়েছে জেলা প্রশাসনের।
প্রথম পর্বের উচ্ছেদ অভিযান শেষে ৯ ফেব্রুয়ারি ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছিলেন, ‘চার-পাঁচ দিনের মধ্যে’ দ্বিতীয় পর্যায়ে কর্ণফুলি তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ফের শুরু হবে।
তবে এর পর আর উচ্ছেদ অভিযান না হওয়ায় এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
জবাবে তিনি বলেন, “কোনো অদৃশ্য শক্তির অস্তিত্ব নেই। উচ্ছেদ কাজ চলমান, এটা চলবে। নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করতে হবে এবং নাব্য ফিরিয়ে দিতে হবে।”
শুধু কর্ণফুলি নয়, ঢাকার বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা সব নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে এবং নাব্য ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এ লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। আমি টাস্কফোর্সের প্রধান।
“অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো ধরনের কম্প্রোমাইজ করা হবে না।”
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনো বিষয় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অবৈধ স্থাপনার মাধ্যমে নদীই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
উচ্ছেদ বন্ধ থাকা নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, অভিযান পরিচালনায় তহবিল সংকট আছে। পাশাপাশি উচ্ছেদের পর উদ্ধার করা জমি নিয়ে কী করা হবে, সে বিষয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন তারা।
কর্ণফুলির তীরের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনায় অর্থ সংকট আছে কি না সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, “অর্থ বরাদ্দের কোনো সংকট নেই। এটা পাওয়া যাবে।”
“চট্টগ্রামে ভূমিমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী আছেন। উনাদের সাথে বসে সেই কার্যক্রম ঠিক করা হবে।”
পরিদর্শনের সময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান।
২০১০ সালের ১৮ জুলাই হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে জনস্বার্থে করা রিট আবেদনে হাই কোর্টের এক আদেশে নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সেইসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলে আদালত।
আদালতের নির্দেশের পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে। সে সময় পতেঙ্গা, ইপিজেড, বন্দর, কোতোয়ালি, বাকলিয়া ও চান্দগাঁও মৌজার ৩৬৮ এবং পূর্ব পতেঙ্গা মৌজার ১৭৪৪টিসহ মোট ২ হাজার ১১২টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়।
ওই তালিকা ধরেই পাঁচ দিন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ১০ একর জমি উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। এসব জমির কিছু অংশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজও শুরু করেছে তারা।