ঢাকা থেকে উড়ালের পরপরই অস্ত্র উঁচিয়ে গুলির হুমকি: যাত্রী

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ‘ছিনতাইকারী’ যাত্রীদের দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলিবর্ষণের হুমকি দেন বলে জানিয়েছেন ওই উড়োজাহাজের একজন যাত্রী।

মিন্টু চৌধুরী চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2019, 03:42 PM
Updated : 24 Feb 2019, 04:10 PM

তিনি বলছেন, অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি উড়োজাহাজের মধ্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও করেছিলেন। তবে তাতে আরোহীদের কেউ বিদ্ধ হননি।

রোববার রাত সোয়া ৮টার দিকে থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসার পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই বিবরণ দেন যাত্রী ওসমান গণি (৩৫)।

কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার বাসিন্দা ওসমান জানান, রোববারই ওমান থেকে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। এরপর ঢাকার শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের ওই ফ্লাইটে করে তিনি চট্টগ্রামে আসছিলেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উড়োজাহাজটি বিকালে ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে।

“এর ১৫ মিনিট পরই ওই ব্যক্তি পিস্তল নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। এ সময় সে যাত্রীদের উদ্দেশে বলে, কেউ উঠে দাঁড়ালে বা নড়াচড়া করলে গুলি করা হবে। এ সময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এরপর ওই ব্যক্তি কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে।”

বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সেটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে দুবায়ের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল এই উড়োজাহাজের।

উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামে অবতরণের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তা ঘিরে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পর অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডোরা।

কমান্ডো অভিযান শুরুর ৮ মিনিটের মধ্যে সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থার বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজটি মুক্ত এবং ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীকে আহত অবস্থায় আটকের কথা জানান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান।

পরে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, আহত ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম ‘মাহদী’ এবং তার বয়স ২৬-২৭ বছর- শুধু একটুকুই বলতে পেরেছেন অভিযানে থাকা সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা। তার আর কোনো পরিচয় তারা দিতে পারেননি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে কয়েকটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর উড়োজাহাজের ইমার্জেন্সি গেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর সেখান দিয়ে যাত্রীদের দল বেঁধে নেমে আসতে দেখা যায়।

নেমে আসার পর কয়েকজন যাত্রীকে আতঙ্কিত অবস্থায় কথা বলতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজন পাইলটের প্রশংসা করে তাকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন বলে শোনা যায়।

সাদমান সাকিব নামে ওই ফ্লাইটের আরেক যাত্রী বলেন, এ ঘটনায় খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

“আমি প্লেনের পেছন দিকে ছিলাম। ছিনতাইকারীও পেছনে ছিল। হঠাৎ সে সামনে চলে যায়। এরপর দুটো গুলির শব্দ শুনি। তখন সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে বিমানটি অবতরণ করলে আমরা ইমার্জেন্সি গেট দিয়ে নেমে পড়ি।”