রঙতুলিতে শহীদ মিনার আঁকলো সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা

মাতৃভাষা দিবসে প্রভাত ফেরিতে শহীদ মিনার ঘুরে এসে রঙ আর তুলির আঁচড়ে একুশের এই চেতনা এঁকে দেখাল বস্তিতে বেড়ে ওঠা শিশুরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2019, 01:45 PM
Updated : 21 Feb 2019, 01:45 PM

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের হোটেল সফিনা লিমিটেড তাদের গ্রিন ভ্যালি রুফটপ রেস্তোরাঁয় সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে এই আয়োজন করে। বিভিন্ন বয়সী ৪০ জন শিশু এই আয়োজনে অংশ নেয়।

নানা বয়সী এই শিশুদের সকলের বেড়ে উঠা বস্তিতে। সমাজের অন্য শিশুদের মত নাগরিক সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। এই শিশুরাই নিজের মত করে ছবি এঁকে, ছড়া শুনিয়ে জানালো একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে নিজেদের ভাবনার কথা।

এদেরই একজন জুঁই আক্তার। আট বছর বয়েসী এ শিশুর বেড়ে ওঠা দেওয়ানহাট রেল লাইন বস্তিতে। বাবা রিকশাচালক, আর মা কাজ করেন বাসাবাড়িতে।

নিজের আঁকা ছবি দেখিয়ে জুঁই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে,  “সকালে সবাই মিলে গেছি শহীদ মিনারে। সেখান থেকে ঘুরে এসে এঁকেছি শহীদ মিনার।”

দশ বছরের মো. নবীও থাকে দেওয়ানহাট বস্তিতে। তার বাবা রিকশা চালান। মা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মসলা বাটার কাজ করেন।

সবার সঙ্গে শহীদ মিনার দেখে আসার অভিজ্ঞতা নিয়ে নবী ছিল দারুণ উচ্ছ্বসিত।

এনায়েত বাজার গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা নুরজাহানের রঙতুলিতেও ফুটে উঠেছে ভাষা শহীদদের স্মৃতির মিনার।

সে বলে, “আগে কখনও এমন অনুষ্ঠানে যাইনি। এখানে নতুন অনেক বন্ধু হয়েছে।” 

ছবি আঁকার পাশাপাশি একুশের এই দিনে ছড়াও শোনালো সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা। 

এ আয়োজন নিয়ে হোটেল সফিনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিহাব সাগির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা নাগরিক সুবিধার সবকিছু পেয়ে বড় হলেও সমাজের অনেক শিশু আছে যারা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারা এ ধরনের আয়োজনে অংশ নিতে পারে না। তাদের মুখে হাসি ফোটাতেই এ আয়োজন।”

হোটেল সফিনার এই আয়োজনে সহায়তা করেছে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান স্মাইল বাংলাদেশ।

স্মাইল বাংলাদেশের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, “এই সব শিশুরা সিআরবিসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াত আর ভিক্ষা করত। আমরা তাদের অক্ষরজ্ঞান দেওয়ার কাজ করছি।”

আয়োজকদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিশুদের মাঝে সনদও বিতরণ করা হয়।