ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগ্রাবাদ ব্যাংক কলোনির সামনে থেকে এক ব্যক্তিকে ‘অপহরণ’ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ আসে থানায়।
“আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি পুলিশের জরুরি সেবা (হটলাইন) ৯৯৯ এ ফোন করে অপহরণের অভিযোগ জানান। তার দাবি ছিল কালো রঙের একটি মাইক্রাবাসে করে তার পরিচিত এসএম জসীম উদ্দিন শিকদার নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়েছে।”
“অভিযোগ পেয়ে ডবলমুরিং থানা পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে কোনো ধরনের সত্যতা না পেয়ে আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে তিনি কথিত জসীমের স্ত্রীসহ থানায় আসেন মামলা করতে।”
ওসি মহিউদ্দিন জানান, “স্থানীয়দের সাথে কথা বলে অপহরণের সত্যতা না পেয়ে আলাউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে তিনি জানান।”
পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে জসীম বাসায় ফোন করে জানান, তিনি দাউদকান্দিতে একটি হাসপাতালে আছেন। পরে ডবলমুরিং থানা পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে আনে।
মূলত জসীম তার প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আলাউদ্দিনকে দিয়ে এ কাজ করেছে বলে জানান ওসি।
এদিকে আলাউদ্দিন ‘অপহরণের’ ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে জসীম আদালতে তাকে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহানের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আলাউদ্দিন বলেছেন, ছাপা কারখানায় কাজ করার সুবাদে তার সাথে জসীমের পরিচয়। সে সূত্রে জসীম তাকে নিজের প্রতিষ্ঠানে বেশি বেতনে কাজ করার প্রস্তাব দেন। দুইজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়ায় জসীমের বাসায় আলাউদ্দিনের যাতায়াত ছিল।
১৫ ফেব্রুয়ারি জসীম আলাউদ্দিনকে তার বাসায় নিয়ে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জসীম একে খান গেইটে গিয়ে তার মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে বাসে করে কুমিল্লা রওনা হন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজের অন্য এক ব্যক্তির মোবাইল থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে আলাউদ্দিন ‘অপহরণের’ বিষয়টি জানান।
ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, “অপহরণের বিষয়টি যে সত্য নয় তা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে ২১১ ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতকে জানাব।”