সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলার মাঠে পাঠক ও লেখকদের সমাগম বাড়তে থাকে।
মেলার প্রতিটি স্টলের সামনে দেখা গেছে শিশু-কিশোর, নারীসহ নানা বয়সী পাঠকদের। প্রবেশ পথে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র-ট্রাস্ট কেন্দ্র চট্টগ্রাম এর স্টলের সামনে দেখা গেছে এ প্রজন্মের পাঠকদের।
মেলায় আসা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছোটবেলা থেকেই যদি ওরা দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে বড় হয় তাহলে আমরা আশাবাদী হয়ে উঠি। তরুণদের বইমুখী করতে এ রকম মেলা আয়োজন অপরিহার্য।”
মেলায় শিশুদের বইয়ের চাহিদা বেশি বলে জানালেন কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থার বিক্রয়কর্মীরা।
ছুটির দিনে সন্তানদের সাথে নিয়ে মেলায় এসেছিলেন চাকরিজীবী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ছেলে-মেয়েরা বইমেলায় এসে নানা রকম বইয়ের সাথে পরিচিত হচ্ছে। নিজেদের পছন্দের বই কিনছে। এজন্যই তাদের নিয়ে আসা।”
মেলায় ক্রেতাদের পাশাপাশি আসতে দেখা গেছে লেখকদেরও।
বইমেলা নিয়ে শুকলাল দাশ বলেন, “চট্টগ্রামের মানুষের অনেক দিনের প্রত্যাশা ছিল এ রকম একটা বইমেলার। চট্টগ্রামের পাঠকরা যে এর অপেক্ষায় ছিলেন তা আজকের মেলা দেখলেই বোঝা যায়।”
গল্পকার জাহেদ মোতালেব সন্ধ্যায় এসেছিলেন মেলায়।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে একটি সম্মিলিত বইমেলা আয়োজনের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। এবার চট্টগ্রামের লেখকদের প্রায় দেড়শ বই প্রকাশিত হবে ফেব্রুয়ারি মাসে।
“বইমেলার এ আয়োজন প্রতিবছর করা হলে এই মেলাকে ঘিরেই বই প্রকাশিত হবে, যেটা চট্টগ্রামের লেখক-পাঠক সবার জন্যই ভালো হবে।”
বান্ধবীদের সঙ্গে বইমেলায় ঘুরতে এসেছিলেন কলেজ ছাত্রী নিগার সুলতানা। ঢাকার একুশে বইমেলার মতো চট্টগ্রামেও বইমেলার এই আয়োজনে খুশি তিনি।
“এ বছর শুরু হলো। এবারের আয়োজন নিয়ে আমরা খুশি। আশা করি আগামীবার থেকে আরো বড় পরিসরে হবে।”
চট্টগ্রাম ও ঢাকার মোট ১১০টি প্রকাশনা সংস্থার অংশগ্রহণে রোববার বিকালে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম সংলগ্ন মাঠে এই মেলা শুরু হয়। এই মেলায় অংশ নিয়েছে ঢাকার ৫৫টি প্রকাশনা সংস্থা ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেলা আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “এবারের সফলতার উপর ভর করে আগামীতে আরো বড় পরিসরে বইমেলা করব, যাতে ঢাকার কাছাকাছি মানের বইমেলা হয়। এতে পাঠক সৃষ্টি হবে। লেখকদের উপর চাপ থাকবে এবং প্রকাশকরাও উৎসুক হয়ে অপেক্ষা করবেন।”
প্রতিবছর একই সময়ে বইমেলা আয়োজন করার পাশাপাশি এর পরিসর ও স্টল সংখ্যা বাড়ানোর কথাও বলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র।
এর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থা, লেখক ও সাহিত্যিকদের পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে বড় পরিসরে একুশের বইমেলা আয়োজনের দাবি ওঠে।
সেই দাবিতে সম্মিলিতভাবে বড় পরিসরে বইমেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মেলায় অন্যপ্রকাশ, অনুপম, প্রথমা, চন্দ্রবিন্দু, আগামী, আহমদ, কাকলী, আগামী, ইউপিএল, পেন্সিল, রোদেলা, অ্যার্ডন, পাঞ্জেরি, আহমদ পাবলিসার্সসহ ঢাকার বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার স্টল রয়েছে।
চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থার মধ্যে আছে বলাকা, শৈলী, আবীর, নন্দন, বাতিঘর ও খড়িমাটিসহ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা।