শনিবার রিমান্ড শেষে মিতুকে চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে হাজির করা হয়।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী সাহাবুদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রিমান্ড শেষে মিতুকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার এসআই আবদুল কাদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জিজ্ঞাসবাদে ঘটনার রাতের বিষয়ে মিতু আমাদের কিছু তথ্য দিয়েছেন।
“উনি জানিয়েছেন- ভারতীয় নাগরিক উত্তম প্যাটেলের সাথে সম্পর্ক নিয়ে স্বামী আকাশের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। তিনি স্বামীর কাছে এজন্য ক্ষমাও চান।”
মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে এসআই আবদুল কাদের বলেন, ওই রাতে আকাশের সাথে মিতুর আবারো প্যাটেলের সাথে সম্পর্ক নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি মিতুর তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন মহানগর হাকিম আল ইমরান খান।
পাশাপাশি আদালত মিতুর সঙ্গে নারী কনস্টেবল রেখে হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুসরণ করে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
চিকিৎসক আকাশের মা জোবেদা খানম ১ ফেব্রুয়ারি নগরীর চান্দগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় করা এ মামলায় তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার মা শামীম শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, ছোট বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা, যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা প্যাটেল ও ডা. মাহবুবুল আলমকে আসামি করা হয়।
৩২ বছর বয়সী আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ‘থ্রি ডক্টরস’ নামে মেডিকেল ভর্তির একটি কোচিং সেন্টার চালাতেন তিনি।
বিয়ের পরপরই উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন মিতু। সেখান থেকে ১৩ জানুয়ারি দেশে ফেরেন তিনি। তার দুই সপ্তাহের মাথায় ৩১ জানুয়ারি ভোরে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন আকাশ।
আত্মহত্যার আগে ফেইসবুকে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ করে যান। এর ‘প্রমাণ’ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার ‘বন্ধুদের’ বেশ কিছু ছবিও ফেইসবুকে তুলে দিয়ে যান আকাশ।
এরপর পুলিশ ঘটনার দিন রাতেই নন্দনকানন এলাকায় এক আত্মীয়র বাসা থেকে মিতুকে আটক করে। আকাশের অভিযোগের বিষয়ে থানায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।