শুক্রবার শেষ দিনের আয়োজনে আন্তঃধর্মীয় সভায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন পরস্পরের সঙ্গে সৌহার্দ্য বিনিময় করেন।
সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় রাণী জপমালা গির্জাসংলগ্ন বিশপ হাউজের সামনে এ সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচারিও, সাথে ছিলেন চট্টগ্রামের আর্চবিশপ মজেস কস্তা।
সমাপনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচারিও বলেন, “শান্তি ও সম্প্রীতি হচ্ছে সব ধর্মের মূলকথা। শুধু এই চট্টগ্রাম কিংবা বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে আমরা যেন এই শান্তি আর সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে সব সময় সচেষ্ট থাকি।
“শুধু খ্রিস্টধর্ম নয়, সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে আমরা একসাথে থাকি। এই শান্তি ও সম্প্রীতি যেন শুধু উপরের তলার মানুষদের জন্য না হয়, এটা যেন সমাজের সকল স্তরের, একেবারে নিচের পর্যায়েও সঞ্চারিত হয়। ধর্মের মর্মবাণী যেন মানুষ উপলব্ধি করতে পারে।”
আর্চবিশপ মজেস কস্তা বলেন, “৫০০ বছর আগে এই চট্টগ্রাম দিয়ে খ্রিস্টধর্মে বিশ্বাসীরা পূর্ববঙ্গে আগমন করেছিলেন। আমরা প্রার্থনা করেছি, আমাদের মধ্যে যেন ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়। আমরা প্রার্থনা করেছি, আমরা যারা প্রতিবেশী, যিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন, আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি যেন চলমান থাকে।”
আন্তঃধর্মীয় সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, পালি বিভাগের অধ্যাপক জীনবোধি ভিক্ষু, রামকৃঞ্চ মিশনের অধ্যক্ষ শক্তিনাথানন্দ মহারাজ, শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি মাওলানা আমজাদ হোসেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব ও ইসমাইল হোসেন বালি, স্থপতি আশিক ইমরান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে আসা খ্রিস্টধর্মীয় বিশপ, খ্রিস্টান মিশনারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রার্থনা সঙ্গীতে দলীয় নৃত্য পরিবেশিত হয়। মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ছিল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একদল নৃত্যশিল্পীর।
বঙ্গদেশে খ্রিস্টধর্ম প্রচলন করতে এসে আরাকান রাজার সৈন্যদের হাতে প্রাণ দেওয়া শহীদদের স্মরণে পরিবেশন করা হয় গান।
বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে চট্টগ্রামের দেয়াং পাহাড়ের মরিয়ম আশ্রমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল।