বৃহস্পতিবার কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও অপসারণের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে একটি সমন্বয় সভায় পতেঙ্গা, ইপিজেড, বন্দর, কোতোয়ালি, বাকলিয়া, চান্দগাঁও মৌজার ৩৬৮ এবং পূর্ব পতেঙ্গা মৌজার ১৭৪৪টিসহ ২১১২টি স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে আলোচনা হয়।
২০১৬ সালের ১৬ অগাস্ট হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ দুই তীরের স্থাপনা সরাতে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়ার দুই বছর পর তা বাস্তবায়নে নামতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে শুরু করে মোহরা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা এইসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আগামী সোমবার থেকে অভিযানে নামবে তারা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উচ্চ আদালতের নির্দেশেই এসব অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং তা উচ্ছেদ করা হচ্ছে।”
পতেঙ্গা থেকে মোহরা পর্যন্ত নদীর দুইপাশের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তবে ওই এলাকায় আদালতের নির্দেশনা মেনে এর মধ্যে ছয়টি সরকারি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে না।”
নগরীর লালদিয়ার চর, শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন চাক্তাই, সদরঘাট এলাকার অংশে অবৈধ স্থাপনা বেশি এবং এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালীরা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
সভায় অতীতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর সীমানা পিলার উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরুর আগে চিহ্নিত করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উচ্ছেদ কার্যক্রমে প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, পুলিশ এবং র্যাব। এই অভিযান পরিচালনার সমন্বয় করবেন পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উচ্ছেদের প্রথমদিনে কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে পতেঙ্গা এলাকায় অভিযান চালানো হবে।
২০১০ সালের ১৮ জুলাই হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে জনস্বার্থে করা রিট আবেদনে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সবধরণের স্থাপনা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। একইসাথে আদালত স্থানীয় প্রশাসনকে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলে।
আদালতের নির্দেশের পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে। এ নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে ২০১৫ সালের নভেম্বরে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।