বাজারে চাঁদাবাজি: একজনকে পিটিয়ে মারলো পাহাড়তলীর দোকানিরা

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর এক বাজারে ‘চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে’ ক্ষমতাসীন দলের এক সাবেক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2019, 09:34 AM
Updated : 7 Jan 2019, 01:57 PM

সোমবার পাহাড়তলী রেল স্টেশন সংলগ্ন বাজার সড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানান।

নিহত মো. মহিউদ্দিন সোহেল (৪২) দক্ষিণ খুলশী এলাকার আবদুল বারিকের ছেলে। সোহেলের সহযোগী রাসেলও জনতার পিটুনিতে আহত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক সোহেল এক সময় ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী বলে পরিচয় দিতেন তিনি।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সোহেল ও তার অনুসারীরা দীর্ঘদিন ধরে বাজারে আসা মালবাহী প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫০টাকা করে চাঁদা আদায় করে আসছিল। রোববার সোহেল ঘোষণা দেয়, সোমবার থেকে গাড়ি প্রতি ১০০ টাকা করে দিতে হবে।

এই প্রেক্ষাপটে সোমবার সকালে পাহাড়তলী স্টেশন রোড বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়।

জাহাঙ্গীর আলম নামে এক স্থানীয় ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের বলেন, বাজারের পাশে রেলের দুটি কক্ষ দখল করে সেখানে অফিস বানিয়েছে মহিউদ্দিন সোহেল। সেখানে বসেই তারা চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল।

সোমবার সকালে সোহেলের লোকেরা চাঁদার দাবিতে বাজারের ব্যবসায়ী ওসমান খানের ওপর হামলা চালিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দিলে অন্য ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

এরপর প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য বাজারে জড়ো হওয়া কয়েকশ লোক গিয়ে সোহেলদের কক্ষ দুটিতে আগুন দেয় এবং সেখান থেকে সোহেল ও রাসেলকে ধরে নিয়ে এসে পিটুনি দেয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাজারে গেলে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়ে বলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং) আশিকুর রহমান জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ঘটনার পর ব্যবসায়ীরা বাজারের দোকানপাট বন্ধ রেখে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। সেই বাধা পেরিয়ে পুলিশ গিয়ে সোহেল আর রাসেলকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহেলকে মৃত ঘোষণা করেন জানিয়ে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, “তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।”

বাজারের একজন ব্যবসায়ী বলেন, “সোহেল তার লোকজন দিয়ে দোকানদার ও কর্মচারীদের ধরে রেলের দখল করা ঘরে নিয়ে আটকে রাখত, ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখাত। চাঁদা না দিলে মারধর করত। সবাই তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল।”

সকালের এ ঘটনার পর বেশ কিছু সময় বাজারের পরিস্থিতি থমথমে থাকলেও বেলা ১টার দিকে দোকানপাট খুলতে শুরু করে। তার আগে স্থানীয়রা সোহেলের দখল করা কক্ষ দুটির আগুন নিভিয়ে ফেলেন।