খসরু-নওফেলের সঙ্গে বৈঠকে ব্রিটিশ কর্মকর্তা

নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে আলোচনায় চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে দেখা করেছেন যুক্তরাজ্য দূতাবাসের এক কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2018, 04:17 PM
Updated : 12 Dec 2018, 04:17 PM

ব্রিটিশ দূতাবাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান আবু জাকির বুধবার বিকালে বন্দর নগরীর চশমা হিলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নওফেলের বাড়িতে যান।

সন্ধ্যায় তিনি যান মেহেদীবাগে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরুর বাড়িতে।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু চট্টগ্রাম-১১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী। নওফেল এবারই প্রথম প্রার্থী হয়েছেন চট্টগ্রাম-৯ আসনে।

নওফেলের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠকে আবু জাকিরের সঙ্গে দূতাবাসের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইজাজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

নওফেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটমকে জানান, চট্টগ্রামের নির্বাচনী পরিবেশ-পরিস্থিতি, জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু ভোটারদের অবস্থান ও নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে তাদের।

তিনি বলেন, “নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে তাদের অনেক প্রশ্ন ছিল। অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে কি না, সংঘাত হচ্ছে কি না, তা জানতে তারা এসেছিলেন।”

নওফেল বলেন, “আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, চট্টগ্রামের নির্বাচনের পরিবেশ বেশ উৎসবমুখর, কোন ধরনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নেই।  তারা বেশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।”

চট্টগ্রাম-৯ আসনে নওফেলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা শাহাদাত চৌধুরী কারাগারে রয়েছেন।

সে বিষয়ে ব্রিটিশ কর্মকর্তা কিছু বলেছেন কি না- জানতে চাইলে নওফেল বলেন, “আইন নিজস্ব গতিতে চললে তাদের মতামত নেই।”

ব্রিটিশ কর্মকর্তা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা কয়েকটি ঘটনার বিষয়েও জানতে চেয়েছিলেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “নির্বাচনে এ ধরনের কিছু ঘটনা ঘটে। পশ্চিমা বিশ্বেও হয়। যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাচনের উদাহরণও আমি দিয়েছে।

“পৃথিবীর কোনো দেশে নির্বাচনে ১০০ ভাগ স্থিতিশীল পরিবেশ থাকে, এটা কেউ বলতে পারবে না।  কিছু না কিছু সমস্যা হয়।”

জামায়াতের বিষয়েও ব্রিটিশ কর্মকর্তা জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে।

নওফেল বলেন, “জামায়াতে ইসলামী যেহেতু উগ্র একটা দল, উগ্র ধর্মীয় রাজনীতি করে। তারা নির্বাচনে কোন প্রভাব বা সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন।

“আমি বলেছি, জামায়াত অনিবন্ধিত দল ঘোষিত হয়েছে, তাই বলে তারা তো বাতাসে মিলিয়ে যায় নাই। তাদের সশস্ত্র ক্যাডাররা এখন বিএনপিতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা ধারণা করছি, বিএনপিতে থেকে তাদের চাদরে লুকিয়ে থেকে জামায়াত কোনো ধরনের কিছু একটা করতে পারে, তা অস্বাভাবিক না।”

“তাদের শঙ্কা একটা জামায়াত নিয়েই, সে ধরনের ইঙ্গিতই তারা দিলেন। সেটা পশ্চিম বা পূর্বের দেশ সকলেরই আছে। জামায়াতের প্রশ্নটা উঠেছে নেগেটিভ সেন্সে, পজিটিভ তো নয়,” বলেন নওফেল।

চট্টগ্রাম-৯ আসনে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ভোটার বেশি থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন ব্রিটিশ দূতাবাসের কর্মকর্তা।

নওফেল বলেন, “অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে আওয়ামী লীগের প্রয়োজন আছে। আওয়ামী লীগের ওপর তারা আস্থা রাখতে পারে বলে জানিয়েছি।”

ব্রিটিশ দূতাবাসের কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, “তারা চট্টগ্রামের সব আসনের নির্বাচনী সিনারিও জানতে চেয়েছেন। সারাদেশে কী চলছে, তা তারা জানেন। আমরাও তাদের বলেছি, কী চলছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচনী পরিবেশের নামে যা চলছে, চট্টগ্রামে তা আমরা জানিয়েছি। দুপুরে পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায় প্রচারণায় ছাত্রলীগের হামলার কথাও বলেছি। বিশেষ করে চট্টগ্রামে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের বাসায় অভিযান, গণগ্রেপ্তার ও হয়রানির বিষয়ে বলেছি।”