গত ২৪ ও ২৫ অক্টোবর জেব্রা দুটির মৃত্যু হলেও তা জানা যায় রোববার। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আগে কিছু জানায়নি।
চিড়িয়াখানার চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, খাবার থেকে ‘পরজীবী সংক্রমণ’ হওয়ায় জেব্রা দুটির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একটি মাদী, অন্যটি মদ্দা।
তবে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটির (সিভাসু) শিক্ষক প্রণব পাল বলেছেন, একটি জেব্রা পরজীবী সংক্রমণে মারা গেলেও অন্য জেব্রাটির মৃত্যু হয়েছে আঘাতজনিত ‘শক’ থেকে।
পুরুষ জেব্রাটি দৌড়াদৌড়ি অথবা নিজেদের মধ্যে মারামারির কারণে আগেই পায়ে আঘাত পেয়েছিল বলে এই চিকিৎসকের ধারণা।
প্রণব বলেন, “নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পুরুষ জেব্রাটির শরীরে কোনো সংক্রমণ ছিল কি না তা শনাক্ত করার জন্য। সেটি পেলে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন জমা দেব।”
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. শাহাদাৎ হোসেন শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেব্রাগুলোকে পটিয়া থেকে আনা বিদেশি প্রজাতির ঘাস খাওয়ানো হত।
“নিচু জমিতে চাষ হওয়া এসব ঘাস থেকে সংক্রমণ হয়ে ছয়টি জেব্রাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ২৪ অক্টোবর একটি মাদী ও ২৫ অক্টোবর একটি মদ্দা জেব্রা মারা যায়।”
ময়নাতদন্ত ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জেব্রাগুলোর দেহে ‘ইক্যুয়াস সেলুলাইটিস’ এবং ‘বুট অন’ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর বলেন, “জেব্রা দুটির মৃতদেহ মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে কঙ্কাল সংরক্ষণের জন্য। ছয় মাস পর মাটি থেকে তুলে তা সংরক্ষণ করা হবে। ইতোমধ্যে মৃত জেব্রা দুটির চামড়া কালুরঘাটের লিফ লেদারকে দেওয়া হয়েছে ট্যান করার জন্য।”
তিনি জানান, দুটি জেব্রার মৃত্যুর ঘটনায় চিড়িয়াখানার বাকি জেব্রাগুলোর খাবার বদলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন জীবিত তিনটি মাদি ও একটি মদ্দা জেব্রাকে সবজি এবং খড় খাওয়ানো হচ্ছে।
ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ প্রণব পাল বলেন, “জীবিত জেব্রাগুলোকে ক্রিমির ওষুধ দেওয়া হয়েছে। খাবারের উপকরণ পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। আগের খাবারে কিছুটা প্রোটিনের ঘাটতি ছিল।”
চলতি বছরের মার্চে প্রায় ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কেনা ছয়টি জেব্রা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়। ৬ মার্চ এগুলো আনুষ্ঠাননিকভাবে উন্মুক্ত করা হয়। চিড়িয়াখানার টিকিট বিক্রির টাকা থেকে জেব্রাগুলো কেনা হয়েছিল।