চট্টগ্রামের ‘আন্তর্জাতিক মাদক কারবারি’ ঢাকায় আটক

ছয় মাস আগে চট্টগ্রামের হালিশহরে ১৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় ঢাকা থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে, যাকে আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী বলছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2018, 04:11 PM
Updated : 8 Nov 2018, 04:13 PM

বুধবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মো. রেজওয়ান ওরফে জুবায়ের (৫৫) নামেও ওই ব্যক্তিকে  ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) এসএম মোস্তাইন হোসাইন  বলেন, “রেজওয়ান মূলত আন্তর্জাতিক মাদক কারবারি। মালয়েশিয়া পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা বিমান বন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় নাম না থাকলেও নীরবে ইয়াবা ব্যবসা করে যাওয়া রেজওয়ানের নাম উঠে আসে হালিশহরের ১৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা তদন্তে।”

গত ৩ মে রাতে হালিশহরের শ্যামলী আবাসিক এলাকার এক বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৩ লাখ ইয়াবাসহ দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

পরে মো. আশরাফ (৪৮) ও তার ভাই মো. হাসানের (২৪) জবানবন্দি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৬ মে রাতে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে রাশেদ মুন্না (৩০) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তি থেকে ইয়াবা কারবারিদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, “গত  ৩ মে শ্যামলী আবাসিক এলাকা  থেকে ১৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে মূলত রেজওয়ানের নামটি পাই। তাকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হলেও গা ঢাকা দেওয়ায় ধরা যায়নি।”

রেজওয়ানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সীমান্তে তথ্য পাঠানো হয়েছিল বলে জানান তিনি।  

এই গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, আগে গ্রেপ্তার আশরাফ ছিলেন মূলত ইয়াবা বহনকারী।

“ইয়াবাগুলোর মূল মালিক মিয়ানমারের রেঙ্গুনের বাসিন্দা আব্দুর রহিম।”

রাশেদ মুন্নার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আশরাফ এর আগেও একবার রেজওয়ানের জন্য ইয়াবা এনেছিল। সৌদি আরবে থাকার সময়ই মাদকের কারবারে জড়িয়ে পড়েছিলেন আশরাফ।

ওই ১৩ লাখ ইয়াবা আশরাফ মিয়ানমারের নাগরিক আব্দুর রহিমমের কাছ থেকে এনেছিলেন। ইয়াবাগুলো রেজওয়ান ও হাজী সাইফুলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল রাশেদ মুন্নার।

যেভাবে উত্থান রেজওয়ানের

গোয়েন্দা কর্মকর্তা হুমায়ুন বলেন, রেজওয়ানকে সবাই জুবায়ের নামে চেনে। টেকনাফের শাহপরীর বাসিন্দা রেজওয়ান থাকেন নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার মোজাফফর নগরে।

রেজওয়ান সম্পর্কে মুন্নার চাচা ও মিয়ানমারের নাগরিক আব্দুর রহিম তার (মুন্নার) ফুপাতো বোনের স্বামী।

আব্দুর রহিমের কাছে হুণ্ডির টাকা পাঠানোর সময় রেজওয়ান বেশি লাভ দেখে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন বলে জানান  পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।

তিনি জানান, বায়েজিদের মোজাফফর নগর এলাকায় রেজওয়ানের রয়েছে নিজস্ব ভবন। পাঁচ বছর আগে রেজওয়ান সাততলা ভবনটি তৈরি  করেন। যার প্রথম তলায় গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান আর দ্বিতীয় ও তৃতীয়তলা ডুপ্লেক্স।

সেখানে পরিবার নিয়ে থাকেন রেজওয়ান। অন্য বাসাগুলো ভাড়া দেওয়া। সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পুরো ভবন।

মিয়ানমার থেকে আব্দুর রহিম বাংলাদেশে আসলে ওঠেন রেজওয়ানের বাসায়।

হুণ্ডি ব্যবসায়ী থেকে ইয়াবার কারবারি বনে যাওয়া রেজওয়ানের হোসাইন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স আছে।

আরও খবর