অশ্রুভেজা ভালোবাসায় বিদায় দেবী দুর্গার

আগামী বছরের অপেক্ষায় এবারে অশ্রুভেজা ভালোবাসায় দেবী দুর্গাকে বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানাল হিন্দু ধর্মবলম্বীরা।

উত্তম সেন গুপ্ত পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2018, 01:26 PM
Updated : 19 Oct 2018, 01:28 PM

শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামে দশমী পূজা সম্পন্ন করে পুষ্পাঞ্জলী গ্রহণের পর থেকে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্ততি নিতে থাকে ভক্তরা। দুপুরের পর থেকে শুরু হয় বিসর্জনের পর্ব।

হিন্দু পঞ্জিকা মতে এবছর দেবী দুর্গা মর্ত্যে এসেছেন ঘোড়ায় চড়ে। আর কৈলাসে ফিরছেন দোলায় (পালকি)।

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিবছরের মতো এবারও বিসর্জনের প্রধান স্থান ছিল পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা। দেবীকে বিদায় জানাতে জড়ো হন হাজারো ভক্ত। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষও জড়ো হয় বিসর্জন দেখতে।

এসময় ঢাকের বাদ্য-কাঁসার ঘণ্টায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত এবং আশপাশের এলাকা। পান-সিদুঁর আর মিষ্টিমুখ করিয়ে চারদিনের আনন্দ শেষে অশ্রুসজল নয়নে হিন্দু ভক্তরা বিদায় দেন মা দুর্গাকে।

সববয়সী মানুষের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয় সৈকত প্রাঙ্গণ। যেখানে দেখা মেলে অনেক বিদেশি পর্যটকেরও।

প্রতিমা বিসর্জন দেখতে এসেছিলেন চাকরিসূত্রে বাংলাদেশে আসা এক ইটালিয়ান ও অস্ট্রিয়ার নাগরিক।

অস্ট্রিয়ার নাগারিক বার্নান্ড বিডিনিউজ টোয়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগে কখনও এ ধরনের অনুষ্ঠান আমি দেখিনি। এ প্রথম দেখা। এক কথায় বলতে গেলে এটা আমার কাছে অসাধারণ এক অনুভূতি।”   

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি থেকে জানানো হয়, এবছর চট্টগ্রাম নগরীর ২৫৫টি সার্বজনীন পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর বাইরে ব্যক্তিগত পূজাও অনুষ্ঠিত হয়েছে বেশ কিছু।

সবমিলিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে অন্তত দেড়শটি মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হতে পারে বলে ধারণা কমিটির সদস্যদের।

এছাড়াও নগরীর সদরঘাট, কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীতে ও কাট্টলী সমুদ্র সৈকত ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে।  

প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে সৈকত ও আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে করা হয় আলোকসজ্জা।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) জাহেদুল ইসলাম জানান, নির্বিঘ্নে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পোশাকী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ মোতায়েন অছে।

এছাড়া গোয়েন্দা, টুরিস্ট, বিশেষ শাখার পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি এপিবিএন সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে সৈকত এলাকায়।

এদিকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।