বরিশাল কলোনির নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার চেষ্টা, অস্ত্র-মাদকসহ গ্রেপ্তার ৩

চট্টগ্রামে ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, নগরীর মাদকের আখড়া খ্যাত বরিশাল কলোনিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় থাকা একটি পক্ষের হয়ে কাজ করে তারা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2018, 12:39 PM
Updated : 16 Oct 2018, 12:49 PM

বরিশাল কলোনির পাশ্ববর্তী মালি কলোনি থেকে সোমবার গভীর রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- খায়রুল হক মোল্লা ওরফে রনি (২৬), তানভীর ইসলাম শুভ (২০) ও মো. আরিফ ওরফে ল্যাংরা আরিফ (২৩)।

সদরঘাট থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত মে মাসে উচ্ছেদের পর একটি পক্ষ বরিশাল কলোনিতে ফের আখড়া তৈরির চেষ্টা করে আসছিল।

তারই অংশ হিসেবে রনির নেতৃত্বে গ্রেপ্তাররা বরিশাল কলোনিতে মাদক ব্যবসা চালুর চেষ্টা করে।

“গোপন সংবাদ পেয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়,” বলেন ওসি নেজাম।

তাদের কাছ থেকে এক হাজার ৭০টি ইয়াবা, ৩০ বোতল ফেন্সিডিল, একটি দেশি বন্দুক ও কাতুর্জ উদ্ধার করা হয় বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের পাশে প্রাচীরঘেরা জায়গাটি বরিশাল কলোনি নামে পরিচিত। রেলওয়ের মালিকানাধীন ওই এলাকায় নিম্ন আয়ের বসবাস। বন্দরনগরীর লোকজনের কাছে মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত।

বরিশাল কলোনির ছোটো ছোটো খুপড়িতে (মাদক কারবারি  ও সেবীদের কাছে গিরা নামে পরিচিত) চলে মাদক বেচাকেনা ও সেবন। কলোনির বিভিন্ন স্থানে মাটি খুঁড়ে মজুদ করা হয় মাদক।

২০১৬ সালে এই বরিশাল কলোনিতে অভিযান চালিয়ে কিছু আখড়া পুড়িয়ে দিয়েছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত (ফাইল ছবি)

বরিশাল কলোণি সংলগ্ন বাস্তুহারা কলোণি ধোপার মাঠ, মালি কলোনি, মরিচ্চা গলিতেও প্রকাশ্যে চলে মাদকের কেনাবেচা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভিন্ন সময় ওই এলাকায় অভিযান চালালেও মাদক ব্যবসার মূল হোতারা সবসময়ই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এ মাদক ব্যবসায় ঘুরে ফিরে আসে ফারুক ও ইউসুফের নাম।

গত বছরের ২০ অক্টোবর ফারুক র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর বরিশাল কলোনির নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই চলে যায় ইউসুফের হাতে।

তবে ফারুকের ছোটোভাই শুক্কুরও বরিশাল কলোনির মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধও দেখা দেয়।

দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানে গত ১৭ মে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বরিশাল কলোনির দুই মাদক বিক্রেতা নিহত হওয়ার পর অনেকটা স্থবির হয়ে যায় সেখানকার মাদক ব্যবসা। তবে শুক্কুর বিভিন্ন সময় কলোনীতে পুনরায় মদক ব্যবসার চেষ্টা ও গোপনে ব্যবসা করে আসছিল বলেও জানান স্থানীয়রা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন সময় এরকম বস্তায় বস্তায় ফেনসিডিল আটক করা হয় বরিশাল কলোনিতে (ফাইল ছবি)

সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, গ্রেপ্তার রনি শুক্কুরের মাদক বিক্রি করে। আর ট্রেনে কাটা পড়ে এক পা হারানো আরিফ তাদের সোর্স হিসেবে কাজ করে।

“মাদকবিরোধী অভিযান চলতে থাকায় বরিশাল কলোনিতে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি কিছুটা কমে গেলেও রেল স্টেশন এলাকায় আরিফ খুচরায় বিক্রি করত।”

তবে তারা পুনারায় বরিশাল কলোনি ও আশপাশের এলাকায় মাদক ব্যবসা সংগঠিত করার চেষ্টা করছে বলে জানান রুহুল আমিন।