বৈদেশিক ডাক বিভাগে ইথিওপিয়া থেকে আসা দুটি চালানে ২০৮ কেজি পাতা জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
‘সবুজ চা’ উল্লেখ করে চট্টগ্রাম ও ফেনীর দুই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে এসব নেশাদ্রব্য আসে বলে শুল্ক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত ৩০ অগাস্ট ইথিওপিয়া থেকে উড়োজাহাজে ঢাকা বৈদেশিক ডাক বিভাগে চালান দুটি আসে বলে জানান চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার একেএম নুরুজ্জামান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বৈদেশিক ডাক বিভাগে এসব চালান ডেলিভারির জন্য আসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব পণ্য জব্দ করে গত ৬ সেপ্টেম্বর।
এসব পণ্যের কায়িক পরীক্ষা সম্পন্নের পর বৃহস্পতিবার কাস্টমসের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
কাস্টমস কমিশনার নুরুজ্জামান জানান, ইথিওপিয়া থেকে জিয়াদ মো. ইউসুফ চট্টগ্রামের হালিশহর নিউ এ ব্লকের ইফতেখার হোসেন নামে একজনের ঠিকানা উল্লেখ করে পাঠায় একটি চালান। অন্যটি ইথিওপিয়া থেকে জেমিমা ট্রেডিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ফেনীর আরিফ এন্টারপ্রাইজের বরাবরে পাঠানো হয়।
প্রথম চালানের ১০টি প্যাকেটে ১৬০ কেজি এবং দ্বিতীয় চালানটিতে তিন প্যাকেটে ৪৮ কেজি পাতা পাওয়া যায়, যা ‘খাত’ নামে পরিচিত।
ইথিওপিয়া থেকে আসা এসব পাতা নেশাজাতীয় পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং মানুষের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় বলে কাস্টমস কমিশনার জানান।
এ ধরনের নেশাদ্রব্য বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়েছিল গত ৩১ অগাস্ট। সেদিন ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো গুদাম এবং শান্তিনগরের এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে আটশ কেজি নেশাদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
এরপর আরও কয়েক দফায় বিভিন্ন পরিমাণে ‘খাত’ উদ্ধার করার খবর দেয় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কাথ শ্রেণিভুক্ত এক ধরনের উদ্ভিদ থেকে তৈরি এই নেশাদ্রব্য আফ্রিকার দেশগুলোতে বহু আগে থেকেই প্রচলিত। তবে ইদানিং বিভিন্ন দেশে হেরোইন বা ইয়াবার মতো মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ভেষজ নেশার পাতা।
চায়ের পাতার মতো দেখতে শুকনো ওই নেশাদ্রব্য মুখে নিয়ে চিবিয়ে বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। ওই পাতায় ক্যাথিনোন ও ক্যাথিন অ্যালকালয়েড থাকে বলে ইয়াবার মতোই নেশা হয়।
এ ধরনের বিকল্প নেশাদ্রব্যগুলোকে চিহ্নিত করা হচ্ছে ‘নিউ সাইকোট্রফিক সাবটেনসেস’ বা এনপিএস নামে।