মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক রইসুল বাহারকে চির বিদায়

সবার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চির বিদায় নিলেন মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক রইসুল হক বাহার।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2018, 12:27 PM
Updated : 19 Sept 2018, 02:23 PM

বুধবার সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয় একাত্তরের গেরিলা যোদ্ধা রইসুল বাহারের মরদেহ। সেখানে তার যুদ্ধদিনের সাথী মুক্তিযোদ্ধা, সংবাদপত্রের দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা শেষ শ্রদ্ধা জানান।

এসময় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

লাল-সবুজের পতাকায় মোড়ানো রইসুল বাহারকে শ্রদ্ধা জানান দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার মজুমদার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাবীবুর রহমান, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার শাহাবুদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, বিএফইউজের সাবেক সহ-সভাপতি শহীদুল আলম, কবি কামরুল হাসান বাদল, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ।

এছাড়া ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বাসদ (মার্কসবাদী), বাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র ফুলকী,  উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ওর্য়াকার্স পার্টি, গণ সংহতি আন্দোলন, গণ মুক্তি কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংগঠন।

দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরে জানাজা শেষে মুক্তিযোদ্ধা রইসুল বাহারের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বন্দর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় তাকে।   

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার রাতে মারা যান রইসুল বাহার। দৈনিক পূর্বকোণের এই সহযোগী সম্পাদকের বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।

তিনি পূর্বকোণ ছাড়াও দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের বার্তা সম্পাদক, ডেইলি স্টারের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ সালে দৈনিক সেবক পত্রিকার মধ্য দিয়ে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর দৈনিক পূর্বকোণসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরে একাউন্টস অফিসার হিসেবেও কাজ করেন রইসুল বাহার। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে বন্দর এলাকায় সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ আন্দোলন সংগঠনে ভূমিকা ছিল তার। একজন গেরিলা কমান্ডার হিসেবে চট্টগ্রামের কৈবল্যধাম স্টেশন উড়িয়ে দেওয়ার অভিযানেও ছিলেন তিনি।

নির্মিতব্য 'অপারেশন জ্যাকপট' চলচ্চিত্রের পাণ্ডুলিপি প্রণয়নের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর বইয়ের সম্পাদনাও করেন তিনি। এছাড়া 'পশ্চিম পাকিস্তানের শেষ রাজা' বইয়ের অনুবাদও করেন তিনি।