মঙ্গলবার চট্টগ্রামের র্যাডিসন হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত ভূমির চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌমন্ত্রী।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নৌসেনাদের বীরত্বগাথা নিয়ে ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নির্মিত হচ্ছে নৌমন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতায়।
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করার পর সম্প্রতি ওই সময়কার নৌ কমান্ডো আবু মুসা চৌধুরী দাবি করেন, অপারেশন জ্যাকপটে 'এমভি হরমুজ ও এমভি আব্বাস' নামে কোনো জাহাজ ডুবানো হয়নি।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, “ডিপিপির (ডিটেল প্রজেক্ট প্ল্যান) জন্য কাগজপত্র গেছে। আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছি।
“অপারেশন জ্যাকপট নিয়ে যে ছবিটা হবে এটা আন্তর্জাতিক মানের ছবি হবে। ছবির যে স্ক্রিপ্ট এটা মোটামুটি তৈরি করেছি। এটা আমাদের উচ্চ মহলে … প্রধানমন্ত্রী দেখবেন। কোথায়… এবং কী, বিষয়টা উনি দেখবেন, ঠিক আছে কি না?”
ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, “৪৭ বছর পর ইতিহাস সংগ্রহ করা কী কঠিন কাজ, সেটা আপনারাও উপলব্ধি করতে পারবেন।
“তারপরও যারা যারা যেখানে যেখানে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের সাথে কথা বলে স্ক্রিপ্ট করেছি। এটাই ফাইনাল নয়। আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে।”
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা আরও প্রশ্ন করতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “আমার বক্তব্য হলো এটাই।”
এরপর তিনি অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেন।
এর আগে নৌমন্ত্রী বলেন, বন্দরে যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারী নিহত হয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময়, তাদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য একটি মনুমেন্ট এবং একটি মেরিন মিউজিয়াম চট্টগ্রামে হবে।
“জেনে খুশি হবেন, অপারেশন জ্যাকপটে যে জাহাজ ডুবানো হয়েছিল। সে জাহাজের একটি উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা করিনি, একজন ব্যক্তি এটা করেছেন এবং তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, সেটি আমরা এই মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করব।”
১৯৭১ সালের ১৫ অগাস্ট চট্টগ্রাম, মোংলা, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ বন্দরে একযোগে বাংলাদেশের নৌ কমান্ডোদের প্রথম অভিযান ছিল ‘অপারেশন জ্যাকপট’।
চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য তৈরিতে বিভিন্ন নৌ-কমান্ডোদের সাক্ষাৎকার ও নৌ-কমান্ডো সাজিদুল হক চুন্নুর ‘মুক্তিযুদ্ধে নৌ-কমান্ডো পলাশী কর্ণফুলী ও কলকাতা' শিরোনামের বইকে গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম।
আবু মুসা চৌধুরী অভিযোগ করেছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে ‘হাইলাইট’ করা হবে বলে তিনি জেনেছেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে নির্মিতব্য চলচ্চিত্রের বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ কোটি ১০ লাখ টাকা। তবে এখনও ছবিটির কাস্টিং বাকি আছে বলে জানান গিয়াস উদ্দিন সেলিম।