‘নিরবে সংখ্যালঘু নিপীড়ন চলছে’

দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিরবে নিপীড়ন চলছে বলে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের নেতারা অভিযোগ তুলেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2018, 03:05 PM
Updated : 31 August 2018, 03:05 PM

শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী মহোৎসব আয়োজন উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ ওঠে।

এক প্রশ্নে পরিষদের সাবেক সভাপতি এবং রাউজান উপজেলার পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিত বলেন, “দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিরবে নিপীড়ন চলছে। এর কিছু মিডিয়ায় আসে, অনেকটাই আসে না।

“আমি রাজনীতির লোক। তবুও বলি প্রগতিশলী রাজনৈতিক দলের মধ্যেও একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি ঘাপটি মেরে আছে। সরকারের মধ্যে একটি অংশ সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়। প্রশাসনেও সাম্প্রদায়িক শক্তি আছে।”

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা দেবাশীষ পালিত বলেন, “আমাদের দাবি সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করে শাস্তি বিধান করা হোক।

“সম্প্রতি আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছি। আমাদের ১১ দফা দাবি উনাকে জানিয়েছি। দুর্গা পূজার ছুটি বৃদ্ধির বিষয়ে উনি কিছুটা আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা-চেতনাকে বাধাগ্রস্ত করে একটি চক্র।”

হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি পালিত বলেন, “শুধু মঠ মন্দির সংস্কারের জন্য গত বছরে ২০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি।”

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে বলেন, “বৈষম্য দূরীকরণে আমরা ১১ দফা দাবি দিয়েছি। প্রাণের মাতৃভূমিতে আমরা নিরাপত্তা ও সমঅধিকার নিয়ে শান্তিতে বাঁচতে চাই। দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার।

“হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠ-মন্দির, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হামলা ভাংচুরসহ সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের মানবতাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার করা হোক।”

বিমল কান্তি দে বলেন, রামুর বৌদ্ধ বিহারের মত সাম্প্রদায়িক হামলায় বিধস্ত মঠ-মন্দির ও ঘরবাড়ি সরকারি উদ্যোগে সেনাবাহিনী দ্বারা দ্রুত পুনঃনির্মাণ করতে হবে।

অর্পিত সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে প্রতি জেলায় বিশেষ আদালত গঠন, বাংলা নববর্ষে তারিখ বিভ্রাট অবসান, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে পরিণত করা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

সংবাদ সম্মেলনে জন্মাষ্টমী উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা হয়।

২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় জেএমসেন হল প্রাঙ্গন থেকে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী।

ওইদিন দুপুরে মাতৃ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন স্বামী শক্তিনাথানন্দজী মহারাজ। বিকালে ধর্ম মহাসম্মেলন করবেন স্বামী সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজ।

৩ সেপ্টেম্বর মহানাম সংর্কীতন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, চোখ পরীক্ষা ও ব্লাড গ্রুপিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে নাম সংর্কীতনের সমাপন হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন তালুকদার, তপন কান্তি দে, বর্তমান কার্যকরী সভাপতি মনোতোষ ধর, সহ-সভাপতি সাধন ধর, অলক দাশ, শচীনন্দন গোস্বামী, মাইকেল দে প্রমুখ।