হোটেলে ব্যবসায়ীর লাশ: ফেইসবুকে অন্তরঙ্গ ছবি দেওয়ায় খুন করেন সাবেক স্ত্রী

নগরীর খুলশীতে হোটেল কক্ষে ব্যবসায়ীর দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার সাবেক স্ত্রী স্বীকার করেছেন, তিনিই এই খুন করেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2018, 12:27 PM
Updated : 18 August 2018, 12:27 PM

শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে সাবেক স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন রোকসানা আক্তার পপি।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আব্দুল ওয়ারিশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পপি স্বীকার করেছেন, তিনি একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

“আমাদের তদন্তেও এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি।”

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার ফয়স লেক রোডের লেকসিটি নামের তিন তলা আবাসিক হোটেলের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে মো. মাঈনুদ্দিন (৩৫) নামের ওই ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়। 

তিনি ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া এলাকার বাসিন্দা এবং সেখানে বালুর ব্যবসা করতেন।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মাঈনুদ্দিনের সাবেক স্ত্রী রোকসানাকে শুক্রবার রাতে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কার্যালয়ে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নগর পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) আমেনা বেগম বলেন, “সম্প্রতি ভুয়া ফেইসবুক আইডি খুলে মাঈনুদ্দিন তাদের দাম্পত্য সময়ের অন্তরঙ্গ ছবি পপির ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করেন।

“এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পপি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিবারের সদস্যদের অজান্তে তিনি চীন থেকে দেশে আসেন।”

আমেনা বেগম বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকালে হোটেল কক্ষের খাটে মাঈনুদ্দিনকে গলায় ধারাল ‍ছুরি চালিয়ে জখম করেন।

“পরে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে তা পলিথিনের মধ্যে নিয়ে হোটেল কক্ষের প্লাস্টিকের ডাস্টবিনে ফেলে দেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে রোকসানা হোটেল থেকে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন।”

হোটেলের ওই কক্ষের বাথরুমে রাখা বালতি থেকে পপির রক্তমাখা কাপড়, মাঈনুদ্দিনের জিন্স প্যান্ট, দুটি রক্তমাখা বেডশিট, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা ও চাপাতিসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতেই রোকসানাকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তাকে নিয়ে লেকসিটি হোটেলে উঠেছিলেন মাঈনুদ্দিন।

পুলিশের ভাষ্য, ছয় বছর আগে মাঈনুদ্দিন ও পপির বিয়ে হয়। এর দুই বছর পরে পারিবারিক বিরোধে তাদের বিচ্ছেদ হয়। ২০১৫ সালে ডাক্তারি পড়তে পপি চীনে চলে যান।

খুলশী থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন এর আ জানিয়েছিলেন, চীন থেকে ১৫ অগাস্ট দেশে রওনা হন রোকসানা। বিমানযোগে ১৬ অগাস্ট ঢাকায় পৌঁছার পর মাঈনুদ্দিনের সাথেই রিল্যাক্স পরিবহনের বাসে চড়ে চট্টগ্রামে আসেন। তারপর তারা একসাথে লেকসিটি হোটেলে ওঠেন।

বৃস্পতিবার রাতে হোটেলের সেই কক্ষের বাইরে থেকে বন্ধ দেখে হোটেলের লোকজন পুলিশকে জানায়।

এ ঘটনায় মাঈনুদ্দিনের বড় ভাই জাফর উদ্দিন শুক্রবার রাতে খুলশী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।