টুঙ্গিপাড়ার মেজবান চলবে: নওফেল

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রয়াত হলেও তার দেখানো পথে এবারও জাতীয় শোক দিবসে জাতির জনকের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজন করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী মেজবানের।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2018, 02:37 PM
Updated : 14 August 2018, 02:37 PM

বুধবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খতম এবং দোয়া মাহফিলেরও আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।

গত বছর ডিসেম্বরে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর এবার মেজবান আয়োজনের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তার পরিবারের সদস্যরাই।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিনের বড় ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “আমরা বাবার স্মৃতিকে ধারণ করতে চাই। টুঙ্গিপাড়ার মেজবান চলবে।”

মঙ্গলবার বিকালে নগরী থেকে ৩০টি গাড়িতে করে নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

বহরের নেতৃত্বে আছেন নগর মহিলা লীগের সভানেত্রী ও মহিউদ্দিনের সহধর্মিনী হাসিনা মহিউদ্দিন এবং তাদের বড় ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

দলের সাথে আছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য শফিকুল ইসলাম ফারুক, শফিক আদনানসহ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এরআগে একটি প্রতিনিধি দল বাবুর্চিসহ আয়োজনে নিয়োজিত কর্মীদের নিয়ে কয়েকদিন আগেই টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছায়।

নওফেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চট্টগ্রাম থেকে গিয়ে বাবা প্রথম জাতির জনকের কবরটি পাকা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

“প্রতিবছর ১৫ অগাস্টে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় যেতেন। সেখানে জাতীয় শোক দিবসের মেজবানের আয়োজন তিনিই শুরু করেছিলেন। তিনি আজ নেই।”

মহিউদ্দিন পুত্র নওফেল বলেন, “আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে জাতির জনকের জন্মস্থানের সাধারণ মানুষের জন্য মেজবানের আয়োজন করতেন। সেই আর্দশ ধারণ করেই এ আয়োজন আমরা চালিয়ে যাব। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।

“বাবা থাকতে ৪০ হাজার মানুষের মেজবান করতেন। তাই এবারও সেরকম আয়োজনেরই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশন এবার মেজবানের আয়োজন করছে।

বুধবার সকাল ১১টায় টুঙ্গিপাড়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠ ও বালাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একযোগে মেজবানের খাবার পরিবেশন শুরু হবে।

কলেজ মাঠের আয়োজনে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি গরুর মাংস, সাদা ভাত, চনার ডলা দিয়ে লাউ ও নলার ঝোল পরিবেশিত হবে।

বালাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের আয়োজন সাজানো হয়েছে মুরগির মাংস, সাদা ভাত ও ডাল দিয়ে।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গণি টুঙ্গিপাড়া থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। মাঠে প্যান্ডেল খাটানো, চেয়ার-টেবিল বসানো সব হয়েছে।

“রান্নাও শুরু হয়েছে। এই মেজবানের পুরো আয়োজন স্যার (মহিউদ্দিন) দেখাশোনা করতেন। আজ সব আছে, শুধু স্যার নেই। উনার কথা খুব মনে পড়ছে।”

১৯৯৮ সাল থেকে টুঙ্গিপাড়ায় মেজবান শুরু করেন মহিউদ্দিন। মাঝে এক এগারোর সরকারের সময় কারাগারে থাকাকালে মেজবানের আয়োজন করতে পারেননি।

পরে মুক্তি পেয়ে প্রতি বছর এ আয়োজন চালিয়ে যান চট্টলার জনমানুষের নেতা মহিউদ্দিন। শেষ বয়সে অসুস্থ অবস্থায়ও চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে মেজবানের আয়োজন করতেন তিনি।