বিদেশে গেলে সোজা হয়ে যাই, এখানে কেন নয়, প্রশ্ন পূর্তমন্ত্রীর

বিদেশে গেলে আমরা আইন মেনে চললেও দেশে কেন আমরা মেনে চলি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2018, 10:57 AM
Updated : 12 August 2018, 11:06 AM

এজন্য জনসচেতনতা ‍সৃষ্টিতে জোর দিয়েছেন তিনি।  

রোববার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সেমিনার কক্ষে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের মেগা প্রকল্পের মনিটরিং কমিটির সভায় কথা বলছিলেন মন্ত্রী। সভার সভাপতি ছিলেন তিনি।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জনসচেতনা বৃদ্ধিতে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান সিডিএর চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন,  “সচেতন না হলে ১০ বা ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিলেও ‍সুফল মিলবে না।

“অভ্যাসের পরিবর্তন খুব কঠিন। এই প্রকল্পের জন্য খুব প্রয়োজন সচেতনতা। একটা প্রজেক্ট আকারে নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।”

এরপর গণমাধ্যমকর্মীরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন,  “শহরের অবস্থা তো…আমরা নিজেরাই তো অ্যাওয়ার না। আমরা যখন সিঙ্গাপুর যাই, যখন খাই- এদিক ওদিক দেখি। সিগারেট খেলে একশ ডলার জরিমানা হয়। ওটা ফেললে দুইশ ডলার জরিমানা। এই যে ঢাকায় ছেলেমেয়েরা মারা গেল…ট্রাফিক সিস্টেম না মেনে গাড়ি চলল।”

সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,  “আমাদের জনসংখ্যা বেশি হতে পারে। আমরা যদি ঠিকমত চলি…। প্রত্যেকটা রাস্তা হকারদের দখলে। উচ্ছেদ করতে গেলে আপনারাই বলবেন, মানবিক কারণে করা যাবে না।

“আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমরা সবাই এ দেশকে নিয়ে প্রাউড ফিল করি। বিদেশে গেলে কেন সোজা হয়ে যাই? এখানে কেন সোজা না? সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে দুর্ঘটনা কমে যাবে।”

সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন,  “এখন সড়কে জেব্রা ক্রসিং দিচ্ছে। সড়কের আইন যখন আসছে আমি কেবিনেটে বলেছি গ্রিন, রেড ও ইয়েলো লাইট দিতে। সিস্টেম যদি ইনট্রোডিউস করা হয়, ডেভেলপ করা হয়, তখন অভ্যস্থ হবে। 

“বিদেশে গাড়ি যখন চলছে চলছে। যখন গ্রিন লাইট জ্বলল, ব্যস গাড়ি আর চলবে না। তখন মানুষ রাস্তা পার হয়।”

দেশে সিস্টেমের অভাব আছে কি না- এমন প্রশ্নে জবাবে মন্ত্রী বলেন, “আছে মানে? আমাদের চরিত্রগতভাবে অভাব আছে। একদিন ডিসি হিলে গিয়ে দেখেন কীভাবে মানুষ বাদাম খাচ্ছে। খোসা ফেলছে। কেন ফেলবে? ওটা তো ওয়াকিং প্লেস।”

এর আগে আলোচনায় মন্ত্রী যত্রতত্র গৃহস্থালি বর্জ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও পলিথিন ফেলারও সমালোচনা করেন।

জলাবদ্ধতা নিরসনের মেগা প্রকল্পটির পূর্ত কাজ বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল মজিদ, লে. কর্নেল রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আমেনা বেগম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বন্দরের হাইড্রোগ্রাফার শামসুল আরেফিন প্রমুখ।