তদন্ত কমিটি ডাকলেও ম্যাক্স হাসপাতালে যেতে চান না রাইফার বাবা

চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে রাফিদা খান রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় বিএমডিসি’র গঠিত তদন্ত কমিটি সাক্ষাতের জন্য চিঠি দিয়েছে শিশুটির বাবা সাংবাদিক রুবেল খানকে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2018, 05:20 PM
Updated : 23 July 2018, 05:20 PM

তবে ওই হাসপাতালে যেতে অনীহা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, অন্য কোথাও ডাকা হলে তিনি যেতে পারেন।

সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) চিঠিটি বাসায় পৌঁছেছে বলে জানান রুবেল।

চার সদস্যের তদন্ত কমিটি আগামী ২৪ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ম্যাক্স হাসপাতালে সরেজমিনে তদন্ত চালাবে। সাক্ষ্য দিতে ম্যাক্স হাসপাতালের চেয়ারম্যান শিব শংকর সাহা, মহা ব্যবস্থাপক রঞ্জন প্রসাদ গুপ্ত, শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান রায় চৌধুরী, মৃত্যুর দিন দায়িত্বরত চিকিৎসক দেবাশীষ সেন গুপ্ত, শুভ্রদেব, নার্স ও ওয়ার্ড বয়দেরও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

একই চিঠিতে রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান ও তার স্ত্রীকেও হাসপাতালে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও হাসপাতালে ভর্তির দিন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত চিকিৎসা প্রদান সংক্রান্ত তথ্যাদি তদন্ত কমিটির কাছে সরবরাহ করার জন্য বলা হয়েছে।

গলায় ব্যথা হওয়ায় রাইফাকে গত ২৮ জুন বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ডা. বিধান রায়ের অধীনে চলছিল তার চিকিৎসা। ২৯ জুন রাতে তার মৃত্যু হয়।

রুবেল খানের সঙ্গে মেয়ে রাইফা (পারিবারিক অ্যালবামের ছবি)

তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দিতে ম্যাক্স হাসপাতালে যাবেন না বলে জানিয়ে রুবেল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ম্যাক্স হাসপাতালে আমার দুঃসহ স্মৃতি রয়েছে। সেখানে আমি যাব না। তবে তারা যদি অন্য কোথাও আমার সাথে কথা বলে আমি তাদের সহায়তা করব।”

এদিকে সিইউজে নেতৃবৃন্দও হাসপাতালে যাবে না বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযোগ ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে। আমরা সেখানে কোনোভাবে যেতে পারি না। তারা নিরপেক্ষ কোনো স্থানে কথা বললে আমরা তাদের সহায়তা করব।”

রাইফার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে।

সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি তাদের প্রতিবেদন কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা এবং গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।

এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ম্যাক্স হাসপাতালের বিভিন্ন ত্রুটির কথা তুলে ধরে।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেবকে বরখাস্ত করে। তবে বিধান রায় তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারার কথা জানিয়ে বলে, এই চিকিৎসককে আর হাসপাতালে ডাকবেন না তারা।

এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক ডা. লিয়াকত, শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান রায় চৌধুরী, মৃত্যুর দিন দায়িত্বরত চিকিৎসক দেবাশীষ সেন গুপ্ত, শুভ্রদেবসহ চারজনকে আসামি করে গত ২০ জুলাই চকবাজার থানায় মামলা করেছেন রুবেল খান।