রোববার চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্রটি জমা দেওয়া হয় বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না এবং কেউ অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দিও দেয়নি। সেজন্য ‘ক্রাইম সিন’ পর্যালোচনা করে ‘সায়েন্টিফিক তদন্তের’ আশ্রয় নিয়ে ফরেনসিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেল্দু বিকাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, “আমরা অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি। মহানগর হাকিম আল ইমরান খানের আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে।”
গত বছরের ১৪ জুলাই গভীর রাতে চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসির এমবিবিএসে অধ্যয়নরত আতিফ শেখ ও উইলসন সিং নামে দুই ভারতীয় শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
তারা নগরীর আকবর শাহ থানার আব্দুল হামিদ সড়কের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন।
এদের মধ্যে আতিফ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন, আর উইনসন ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে ঘটনার পর সহপাঠীর বরাত দিয়ে জানায় পুলিশ।
এরপর পুলিশ আতিফের সহপাঠী ভারতীয় আরেক ছাত্র নিরাজ গুরুকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নিরাজ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং রক্তাক্ত অবস্থায় আতিফকে ও আহতাবস্থায় উইনসন সিংকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
থানা পুলিশের কাছ থেকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে পিবিআই উইনসং সিংকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। তাকে হেফাজতে নিয়ে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোন তথ্য আদায় করতে না পেরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ‘উইনসন সিং সেচ্ছায় মূল ঘটনা এড়িয়ে যাচ্ছে’ বলে মত দিয়েছিল।
চিকিৎসকের মতামত নিয়ে উইনসন সিংকে তৃতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়েও কোনো তথ্য না পেয়ে ডিএনএ পরীক্ষার অবেদন করে তদন্ত কর্মকর্তা।
আদালতের আদেশ পেয়ে গত ২১ জানুয়ারি উইনসন সিং ও নিরাজ গুরুর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকার সিআইডির ডিএনএ ল্যাবে পাঠায় পিবিআই।
পিবিআই কর্মকর্তা সন্তোষ জানিয়েছিলেন, ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন আলামতের মধ্যে পাঁচটি আলামতের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডি ল্যাবে পাঠিয়েছিল।
“পরীক্ষার পর ডিএনএ ল্যাব থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চারটি ডিএনএ নমুনা এক হলেও ছুরির বাট থেকে পাওয়া ভিন্ন যে ডিএনএ পাওয়া যায় তার সাথে উইনসন সিংয়ের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে।”