স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত কমিটির ওই নোটিশ বুধবার বেসরকারি হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক রঞ্জন দাশগুপ্তকে পৌঁছে দেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
তদন্ত কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ম্যাক্স হাসপাতালের লাইসেন্সে অনেক ধরনের ত্রুটি রয়েছে।
“এসব ত্রুটি ১৫ দিনের মধ্যে ঠিক করা না হলে এবং এই সময়ের মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনে হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
গলা ব্যথা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর মেহেদীবাগের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দৈনিক সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার রুবেল খানের শিশুকন্যা রাইফা শুক্রবার রাতে মারা যায়।
অভিযোগ ওঠে কতর্ব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সাংবাদিকেদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ ওই হাসপাতালের ডিউটি চিকিৎসক ও নার্সকে থানায় নিয়ে গেলে সেখানে সাংবাদিক ও সিইউজে নেতাদের সঙ্গে ফয়সাল ইকবাল ‘অশোভন আচরণ করেন’ বলে অভিযোগ রয়েছে।
‘রাইফাকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সংগঠনগুলো আন্দোলন এবং দায়ীদের বিচার দাবি করে আসছে।
দাবির মুখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তিন সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রোববার রাতে কমিটির প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেন ম্যাক্স হাসপাতাল পরিদর্শন করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এই হাসপাতালের লাইসেন্সের ত্রুটি আছে এবং অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নোটিশটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে নোটিশে হাসপাতালের কী ত্রুটির কথা বলা হয়েছে তা প্রকাশ করেননি তিনি।
বিএমএ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরীর ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মানুষ জন্মগ্রহণ করলে তার মৃত্যুও একদিন হবে সেটাই স্বাভাবিক এবং সকল মৃত্যুই কষ্টকর ও দুঃখের।শিশু রাইফা খানের মৃত্যুও সকলের কাছে দুঃখজনক ও কষ্টকর।
“তাছাড়াও যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর কষ্ট লাঘবের সুযোগ নেই, কিন্তু প্রতিটা মৃত্যুর পেছনে যদি চিকিৎসকদের গাফিলতির অভিযোগ আনা হয় তাহলে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম দুরূহ হয়ে পড়ে।”
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড কাউন্সিল চিকিৎসাজনিত ভুল-ভ্রান্তির চূড়ান্ত বিচার-বিশ্লেষণ ও নিষ্পত্তি করে থাকে উল্লেখ করে বিএম নেতারা বলছেন, “চট্টগ্রামের স্থানীয় তদন্ত কমিটি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতি পুরোপুরি আস্থা রেখে চট্টগ্রামের বিজ্ঞ সাংবাদিক সমাজকে পুনরায় কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করার জন আহ্বান জানাচ্ছি।”
রাস্তায় মানবন্ধন করে এ বিষয়ে সমাধান সম্ভব নয় মন্তব্য করে বিবৃতিতে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের চিকিৎসকদের প্রতিও তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত শান্ত থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।