অভিনব এমন কৌশলে নকল সোনা দেখিয়ে আসল সোনা ও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
নগরীর মোগলটুলি ও পাহাড়তলী থানার উত্তর কাট্টলী এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে উদ্ধার করেছে চারটি পিতলের দণ্ড, সোনার কানের দুল, আংটি ও নাকফুল।
তাদের কাছ থেকে দুইটি চিরকুট, স্বর্ণের দোকানের কয়েকটি ক্যাশমেমো উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা তিনজন হলেন- টিটু (৩০), দেওয়ান (২০) ও আফজল হোসেন (৩৮)।
সদরঘাট থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, চক্রটির একজন রিকশাচালকের ভূমিকায় থাকে। সে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় দলের অন্য একজন রাস্তায় ফেলে যাওয়া চিরকুট মোড়ানো নকল স্বর্ণের বারটি কুড়িয়ে নেয়।
প্রাথমিক জ্ঞিাসাবাদে গ্রেপ্তার টিটুর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ওসি জানান, চক্রটি নগরীর কদমতলী এলাকা থেকে পিতলের বার সংগ্রহ করে। সেগুলো শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘসে স্বর্ণের বারের আকৃতি দিয়ে তাতে সিল দিয়ে ইংরেজিতে ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট লেখে।
এছাড়াও বিশ্বাস স্থাপনের জন্য স্বর্ণের দোকানের ক্যাশমেমো তৈরি করে তাতে চিরকুট লিখে রাস্তায় ফেলে রাখে।
ওসি বলেন, “টিটু জানিয়েছে, সে রিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় আশরাফ চিরকুট মোড়ানো একটি বার রাস্তায় ফেলে দেয়। সে সেটি খুঁজে নিয়ে যাত্রীকে অথবা ওই এলাকায় পথচারীর বেশে দাঁড়িয়ে থাকা তাদের দলের অন্য একজনকে পড়তে দিয়ে যাত্রীকে প্রলুব্ধ করে।
“তাদের লেখা চিরকুটে লেখা থাকে, ‘শ্রী নিপেন বাবু স্বর্ণাকার। পত্রে আমার প্রণাম নেবেন। আমরা মেয়ের (২২ কেরেট) হাতের থান স্বর্ণ পাঠিয়ে দিলোম। তার জন্য চেইন, মালা তৈরি করে রাখবেন। ............। ”
প্রতারণার জন্য সচরাচর তারা নারী যাত্রীদের টার্গেট করে জানিয়ে টিটু বলেছেন, যাত্রীকে প্রলুব্ধ করে তার কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নেন তারা। নগদ টাকা না থাকলে অনেক সময় যাত্রীরা স্বর্ণলঙ্কারও খুলে দেয়।
“চট্টগ্রাম এসে পূর্বপরিচিত রাজু নামের এক যুবকের সঙ্গে দেখা করে। পরে রাজুর নেতৃত্বে চারজনের দল তৈরি করে প্রতারণার কাজ শুরু করে সে,” বলেন ওসি নেজাম উদ্দিন।
টিটুর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি আরও জানান, চক্রটি ঢাকায়ও অন্তত ২০টি প্রতারণার কাজ করেছে। মিরপুর এলাকায় এ ধরনের প্রতারণা করে বছর চারেক আগে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন টিটু। ১৫ দিন কারাভোগ শেষে বের হয়ে আবারও এ পেশায় জড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টিটু চট্টগ্রাম নগরীতে এ ধরনের আরও কয়েকটি চক্র সক্রিয় আছে বলে তথ্য দিয়েছেন।
রাজুর দল থেকে সরে গিয়ে এখন তারা তিনজন আলাদা আলাদা দল তৈরি করেছেন বলেও পুলিশকে জানয়েছেন টিটু।