বেলালের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, দারোয়ান শাহ আলম বসতে না দেওয়ার পাশাপাশি ধাক্কা দেন, তাতে পড়ে যান তিনি। এটাই তার মৃত্যুর কারণ।
একজন অসুস্থ মানুষকে বসতে না দেওয়াটা অমানবিক হয়েছে স্বীকার করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ঘটনার পর থেকে দারোয়ান শাহ আলম পলাতক।
বেলাল সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারির মাদাম বিবিরহাট এলাকার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালের নিচতলায় কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে ডায়ালাসিস করিয়ে বের হওয়ার কিছু সময় পর ফটকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেলাল (৬৫)।
তাকে প্রথমে জরুরি বিভাগে এবং পরে কিডনি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু ঘটে।
চমেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাত ১০টার দিকে ডায়ালাইসিস সেন্টার থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসেন আবু তাহের বেলাল।
“এসময় সঙ্গে তার মেয়ে ও স্ত্রী ছিলেন। অসুস্থ বোধ করায় তিনি গেটের কাছে রাখা দারোয়ানের টুলটিতে বসতে চেয়েছিলেন। শাহ আলম তাকে সেখানে বসতে দেয়নি। এরপরই বেলাল বলেন যে তার মাথা ঘোরাচ্ছে। তখন তাকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।”
তবে বেলালের ছেলে রাব্বি সাংবাদিকদের বলেন, “বাবা বসতে চাইলে তাকে ধাক্কা দেয় দারোয়ান। এতে মাটিতে পড়ে গিয়ে তিনি ছটফট করতে থাকেন। এরপরই বাবা মারা যান।”
রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনি খুবই অসুস্থ ছিলেন। দারোয়ানের জন্য রাখা টুলটিতে তিনি বসতে চেয়েছিলেন। তাকে বসতে না দেওয়াটা অত্যন্ত অমানবিক। মানবিক বিবেচনায় একজন রোগীকে বসতে দেওয়া উচিত ছিল।
“এরপর উনার শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। উনাকে প্রথমে জরুরি বিভাগে ও পরে ওয়ার্ডে নিয়ে চিকিৎসা দিলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।”
দারোয়ানের বিরুদ্ধে ধাক্কার অভিযোগ নিয়ে পরিচালক জালাল উদ্দিন বলেন, “ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা আমরা পাইনি।”
ডায়ালাইসিস সেন্টারটি একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় পরিচালিত হয়। ওই দারোয়ান তাদের নিয়োগকৃত।
হাসপাতালের পরিচালক বলেন, “দারোয়ানকে বরখাস্ত করতে বলেছি।”
পুলিশ পরিদর্শক জহিরুল বলেন, “ওই দারোয়ানকে আমরা আটক করার জন্য খুঁজছি। কিন্তু ঘটনার পর থেকে সে পলাতক।”